নিজেদের তৈরি প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করল ইরান
ইরানের কর্মকর্তারা নিজেদের তৈরি প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মঙ্গলবার প্রদর্শন করেছেন। দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপেরে ফলে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা সম্পর্কে পশ্চিমাদের উদ্বেগ বেড়ে যাবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ফাত্তাহ নামের ক্ষেপণাস্ত্রটির ছবি প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাহিসি এবং ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের কমান্ডারদের অংশগ্রহণে একটি অনুষ্ঠানে ক্ষেপণাস্ত্রটি উন্মোচন করা হয়।
গার্ডস এর এরোস্পেস ফোর্সের প্রধান আমিরালি হাজিজাদেহ ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলেছেন, ‘নির্ভুল নির্দেশিত ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ১৪০০ কিলোমিটার এবং এটি সমস্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম।’
হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের গতির চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ দ্রুত এবং একটি জটিল গতিপথে উড়তে পারে। যার কারণে তাদের আটকানো কঠিন হয়ে যায়। গত বছর ইরান বলেছিল যে তারা একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে যা বায়ুমণ্ডলের ভিতরে এবং বাইরে ম্যানুভার করতে পারে।
রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, ইরানের ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ‘শত্রুদের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী সিস্টেমকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এবং এটি ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে বিশাল আপ্রেগড। এটি ইসরায়েলের আয়রন ডোমসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী শাসকদের সবচেয়ে উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে বাইপাস করতে পারে।’
ফাত্তাহর সর্বোচ্চ গতি ১৪ মাত্রায় পৌঁছেছে (প্রতি ঘণ্টায় ১৫ হাজার কিলোমিটার) বলে এটি জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় বিরোধিতা সত্ত্বেও ইরান বলেছে, তারা তার প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আরও উন্নত করবে। তবে পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান কখনো কখনো তার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে অতিরঞ্জিত করে।
ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছয়টি প্রধান শক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে অবদান রেখেছিল।
ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেন, যার ফলে তেহরান পূর্বে নিষিদ্ধ পরমাণু কাজ পুনরায় শুরু করে এবং মার্কিন, ইউরোপীয় এবং ইসরায়েলিদের আশঙ্কা পুনরুজ্জীবিত করে যে ইরান পারমাণবিক বোমার দিকে ঝুঁকতে পারে। ইরান ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা অস্বীকার করে আসছে।
পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় তেহরান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা গত সেপ্টেম্বর থেকে স্থবির হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েল তেহরানের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিশ্ব শক্তির প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে এবং কূটনীতি ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/৬জুন/এসএটি)