বৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ভোগান্তি, যানবাহন চলাচলে ধীরগতি
ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে বেড়েছে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ। ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট ও গাড়ির ধীরগতি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গুঁড়িগুঁড়ি টানা বৃষ্টি। এসবের সঙ্গে যুদ্ধ করে কয়েকদিনের জন্য কর্মস্থল ত্যাগ করে ভোগান্তির যন্ত্রণা মাথায় নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো মানুষ ছুটছেন নিজ গ্রামের বাড়ি।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশনের বাসস্ট্যান্ড, সেতু পূর্ব গোল চত্বর ও জোকারচর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে ঘরমুখো মানুষের এমন ভোগান্তির চিত্র দেখা যায়। এছাড়া দূরপাল্লার মোটরসাইকেল আরোহীরা আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।
ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন জোবায়েদ হোসেন। দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশন বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন বাসের জন্য। তাদের গন্তব্যে নাটোরের বনপাড়া এলাকায়। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে এই রেলস্টেশনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। একদিকে বৃষ্টি ও অন্যদিকে বাস না পেয়ে চোখেমুখে যেন পড়ে হতাশা।
জোবায়েদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, যানজটের কারণে বাস পাচ্ছি না। বৃষ্টিতে পরিবার নিয়ে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। দু-একটা বাস পেলেও সেগুলো থামে না। যাত্রী উঠাতেও চায় না। আবার দেখা যায় ভাড়া চায় জনপ্রতি ৫০০। শ্রমজীবী হয়ে এত টাকা কোথায় পাব। তাই বাধ্য হয়ে ট্রাকেই যাওয়ার চেষ্টা করছি।
নওগাঁর আত্রাইয়ের আব্দুস সোবহানের দশা প্রায় একই। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট। দুই লেনের সড়ক থাকায় প্রতি বছর এমন দুর্ভোগ ও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তার মধ্যে বৃষ্টি। এতে করে গাড়ি চালাতে বেগ পোহাতে হয় চালকদের। তবুও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য বাড়ি যেতেই হবে।
জানা গেছে, সোমবার (২৬ জুন) রাত ২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর পরপর দুই বার একটি পরিবহনের সঙ্গে আরেকটি পরিবহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া একটি পরিবহন বিকল হয়। এতে রাত ৩টার পর ১০ থেকে ১২ মিনিট, ৪টার পর প্রায় ১ ঘণ্টা ও ৫টা ৩০ মিনিট থেকে ৫টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত সেতুতে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়।
এরপর মাঝে মাঝে সেতুতে টোল আদায় বন্ধ হওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উত্তরবঙ্গগামী পরিবহনের দীর্ঘ লাইন, ধীরগতির আবার স্থবির হয়ে পড়ে যানবাহন। এতে করে ঘরমুখো মানুষগুলো চরম ভোগান্তিতে পড়ে। সঙ্গে যুক্ত হয় বৃষ্টি। পরে বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ধীরগতি যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে মহাসড়কের পরিবহনগুলো বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভুঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে চলাচল করায় বিভিন্ন অংশে ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই সড়কের কালিহাতী উপজেলা কুচটি হতে এলেঙ্গা রেলক্রসিং, বঙ্গবন্ধু সেতুপুর্ব গোল চত্বর হতে গোবিন্দাসী পর্যন্ত ধীরগতিতে পরিবহন চলাচল করছে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রা: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এলেঙ্গা থেকে সল্লা পর্যন্ত যানজট নেই। বৃষ্টির কারণে সল্লা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব টোলপ্লাজা ও সেতুর ওপরে পরিবহনের চাপ রয়েছে এবং ধীরগতিতে চলাচল করছে। আশা করছি বেলার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সড়কে যাতে যানজট না হয় সে লক্ষ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এসএম)