ভারী বৃষ্টি: মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে পানি ঢুকে শতাধিক দোকানের চাল-ডাল নষ্ট
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছিল জলাবদ্ধতা। আর এই জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যায় মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট। লাগাতার বর্ষণে রাজধানীর অন্যতম চালের আড়ত মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের শতাধিক দোকানের পানিতে চাল, ডাল ও চিনি নষ্ট হয়ে গেছে।
গত শনিবারের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মার্কেটের সামনে পানি জমতে থাকে। এরপর সেই পানি আস্তে আস্তে দোকানে ঢুকে যায়।
গত বুধবার থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ঈদের দিন এবং পরদিন শুক্রবারও বৃষ্টি হয়েছে বেশ। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। ঈদের দিন থেকে কৃষি মার্কেটের পাইকারি দোকানগুলো ছিল বন্ধ। শনিবার সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে পানি জমে গেলে দোকানের মধ্যে পানি ঢুকতে শুরু করে। ফলে সব ভিজে গিয়ে নষ্ট হয় এবং লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের কৃষি মার্কেটে একটি দোকান আছে। তিনি বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমার দোকানে পানি ঢুকে অনেক বস্তা চাল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ঠিক কত বস্তা নষ্ট হয়েছে, সেটা পানি সেচে বের করার পর হিসাব করে বলা যাবে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।’
দোকানে পানি ঢুকে ১০০ বস্তার বেশি চাল নষ্ট হয়েছে বলেও জানান আরেক দোকান মালিক মোহাম্মদ বাচ্চু। মার্কেটের কিছু অংশ রং করতে, স্যুয়ারেজ লাইন ঠিক করতে এবং সিসি ক্যামেরা বসাতে সমিতি কিছুদিন আগে তিন হাজার করে টাকা নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঈদের ছুটিতে মার্কেট বন্ধ থাকায় অনেকেই ঢাকার বাইরে চলে গেছেন বলেন দোকান মালিক বাদশা মিয়া। ফলে অনেক দোকানদার এখনও জানেন না তাদের কতটা ক্ষতি হয়ে গেছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলছেন ব্যবসায়ী সমিতির দিকে আর ব্যবসায়ী নেতারা দুষছেন সিটি করপোরেশনকে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবসায়ী সমিতিকে টাকা দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ফলে মালিক সমিতির অবহেলাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিই। তারপরেও মার্কেটের বিভিন্ন কাজের জন্য বাড়তি টাকা দিয়েছি। টাকা যখন তুলেছে, সঙ্গে সঙ্গে কাজ করলে এই ক্ষতিটা হতো না।’
তবে অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, ‘ওই ব্যবসায়ী ঠিক বলেননি। মিথ্যা বলেছেন। শুধু কৃষি মার্কেট নয়, আশপাশের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর, রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। প্রতি মাসে দোকান থেকে যে চাঁদা নেওয়া হয় তা ১০ থেকে ১২ জন নিরাপত্তাকর্মীর বেতন-বোনাস দিতেই শেষ হয়ে যায়।’
প্রতি মাসে সিটি করপোরেশনকে নির্ধারিত হারে ভাড়া দিলেও তারা কোনো দেখভাল করে না বলেও জানান তিনি।
এই মার্কেটটিতে সব মিলিয়ে ১৭০টি পাইকারি দোকান রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ১০০ দোকানের চাল, ডাল, চিনি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম মন্টু। তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করতে পারিনি। তবে প্রাথমিক ধারণা, কয়েক লাখ টাকা হবে।’
(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/কেআর/এফএ)