গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মৃত্যুর দুই বছর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪৯

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ছিলেন ফকির আলমগীর। গণসংগীত ও দেশীয় পপ সংগীতে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক।

সব অর্জন ফেলে ২০২১ সালের ২৩ জুলাই না ফেরার পথে পাড়ি জমান ফকির আলমগীর। মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী এবং তিন পুত্রসন্তান রেখে যান।

ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব সে সময় জানান, ২৩ জুলাই রাত ১০টার দিকে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হয় ফকির আলমগীরের। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউ ইউনিটের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর আগে কয়েক দিন ধরে ফকির আলমগীর জ্বর ও খুসখুসে কাশিতে ভুগছিলেন। পরে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন, তিনি করোনা পজিটিভ। সেদিনই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

অবস্থা খারাপের দিকে গেলে রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি হাসপাতালে নেয়া হয় ফকির আলমগীরকে। ওই সময় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রয়োজন পড়লে সেখান থেকে তাকে গুলশানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফকির আলমগীরের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও ছিল। যে কারণে জটিলতা বাড়তে থাকে। হাসপাতালে ভর্তির পর দুই ব্যাগ প্লাজমাও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পরপারে ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যান তিনি।

ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, দেশের সংগীতাঙ্গনে বিশেষ করে গণসংগীতকে জনপ্রিয় করে তুলতে ফকির আলমগীরের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এদিকে ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে তার সহকর্মী এবং ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যেও শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

ফকির আলমগীর ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেব ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখেন গুণী শিল্পী ফকির আলমগীর। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে তাকে একুশে পদক দেয়।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ফকির আলমগীরের কণ্ঠে বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলে। গানটি লিখেছেন আলতাফ আলী হাসু। কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেন ফকির আলমগীর।

সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ফকির আলমগীর গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীত শিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা এই শিল্পী গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :