মার্কিন ভিসা নীতি কি উল্টে আওয়ামী লীগকে একাট্টা হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে?

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৪| আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪০
অ- অ+

মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য শাপে বর হলো? বাংলাদেশের রাজনীতিকসহ কয়েকটি শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের ওপর মার্কিন ভিসা বিধিনিষেধের ঘোষণার পর এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার তৈরি হয়েছে বটে। তবে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। বরং এটিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে নেতাকর্মীদের একাট্টা করতেই জোর দিচ্ছে দলটি।

ক্ষমতাসীন দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পেয়েছে ঢাকা টাইমস।

তবে তারা এও নজর রাখছেন যে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র কী করতে যাচ্ছে। যদিও মার্কিন ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগের কিছু যায় আসে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত শুক্রবার যখন মার্কিন স্টেট ডিপার্টপেন্ট ভিসা নীতি প্রয়োগের কথা জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন দেশটিতে সফররত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে ভিসা নীতি নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির বিষয়ে ধারণা পেয়েছেন প্রতিবেদক। তারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিদেশি চাপ হোক, ভিসা নীতি প্রয়োগ করে ভয় দেখানো হোক, এসবের কাছে শেখ হাসিনা মাথা নোয়াবেন না। সংবিধান অনুযায়ীই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শেখ হাসিনার বক্তব্যেও তেমনই ইঙ্গিত রয়েছে। তিনি জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মার্কিন ভিসা নীতি প্রয়োগ নিয়ে কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কে নিষেধাজ্ঞা দিলো আর কে দিলো না, তাতে কিছু যায়-আসে না।

আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে ঘর গোছানোর কাজ করছে। তবে তৃণমূলে কোথাও কোথাও নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব-কোন্দল রয়েছে দলটিতে। এসব দ্বন্দ্ব ভুলে দলের জন্য একাট্টা হয়ে কাজ করার কেন্দ্রীয় নির্দেশনাও রয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র বলছে, মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দলের মধ্যে বাড়তি কোনো চাপ নেই। এখন এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সবার অবস্থানকে এক করে ফেলাই দলের লক্ষ্য। একাট্টা হয়ে দলের জন্য কাজ করতে বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসলেই কি আওয়ামী লীগের জন্য কোনো চাপ তৈরি করছে না? না-কি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দলটির জন্য শাপে বর হয়েছে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই বা কী বলছেন? জানতে চেয়েছিল ঢাকা টাইমস।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে চাপ হিসেবে নেওয়ার বা দেখার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগ সরকার আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্য থেকেই কিন্তু তারা এবার দক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি করার দুটো কারণ আছে। একটি বড় কারণ হচ্ছে, কোনো দেশে তুলনামূলক ভাবে গণতান্ত্রিক ঘাটতি লক্ষ্য করলে এবং দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে তাদের ভূকৌশলগত স্বার্থ সংরক্ষণ করা।

ড. গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘আমি মনে করি, এই ভিসা নীতিকে চাপ মনে না করে বরং আমাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, যাতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের টুকটাক ঘাটতিগুলো কাটিয়ে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারি।

‘এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে ভাবলে, এই ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিএনপি লাভবান হয়েছে তেমন নয়। আমি মনে করি, মার্কিন এই ভিসা নীতি বাংলাদেশের যে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা তাতে ইতিবাচক ভূমিকাই রাখবে’—যোগ করেন এ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পোপ হলেন উত্তর আমেরিকান রবার্ট প্রিভোস্ট, বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন
আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে রাতভর অবস্থানের পর সকালেও বিক্ষোভ
এলাকাবাসীর বিক্ষোভ-অবস্থানের মধ্যে অভিযানের সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার সাবেক মেয়র আইভী
মানবিক করিডরের নামে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা