কুড়িগ্রামে ৫ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ, কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ
কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী উপজেলা ভূরুঙ্গামারীর দুধকুমার নদীর ওপর সোনাহাট সেতুর কাজ প্রায় ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতে দেশের ১৮তম সোনাহাট স্থলবন্দর হতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং কচাকাটা থানাসহ ৬টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না।
সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু দিয়ে পারা পারে বাধ্য হচ্ছেন। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে চালকদের। আমাদানি-রপ্তানি করতেও চরম ভোগান্তিতে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। বৃটিশ আমলের নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ নড়বড়ে রেলসেতু দিয়ে পাথর, কয়লাসহ ভারী পণ্য বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রায় সময় যানজট সহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ঝুকিপূর্ণ রেল সেতুটি যে কোন সময় ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার শংকা স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর নানা অজুহাতের কারণে প্রায় ৫ বছরেও সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। সেতুর ১৩টি পিলারের মধ্যে মাত্র ৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। কবে নাগাদ এই সেতুর কাজ শেষ হবে তা কারওই জানা নেই।
নতুন সেতুর অভাবে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় সরকারের কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় পূরণ হচ্ছে না। পুরনো রেল সেতু দিয়ে পর্যাপ্ত মালামাল পরিবহন করতে না পেরে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। দ্রুত নতুন সেতুর কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ উপজেলাবাসীর।
নকশা ত্রুটি, জমি অধিগ্রহণসহ রেল বিভাগ, সড়ক ও জনপদ,ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে ৩দফা সেতু নির্মাণের মেয়াদ বৃদ্ধি করেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় হতাশ স্থানীয় ব্যবসায়ীমহলসহ উপজেলাবাসী।
সড়ক ও জনপথ দপ্তর সূত্রে জানাযায়, ২০১৮ সালে একনেকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের দুধকুমার নদীর ওপর ১৩৬ কোটি ৩৩ লাখ ৭২হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ দশমিক ১৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতু নির্মাণের অনুমোদিত হয়। সেতু নিমার্ণের কাজ পায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লি. ও ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি. (জেভি)। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২২ জুলাই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা। দেড় বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও আজ অবধি সেতুর মাত্র ৩৫ ভাগ কাজ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ঠিকাদারের গাফলতির কারণে সেতু নির্মাণের ধীরগতির কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারকে বলা হয়েছে দ্রুত কাজ শুরুর জন্য। তবে কবে নাগাদ এই সেতুর কাজ শেষ হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি এই কর্মকর্তা।
(ঢাকাটাইমস/২অক্টোবর/এআর)