পাবনার ‘শীর্ষ মাদক কারবারি’ শাহিনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা

পাবনার শীর্ষ মাদক কারবারি শাহিনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পাবনা জেলার আতাইকুলা থানায় মামলাটি দায়ের করেন পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সি.আই.ডি) এর এএসপি আল মামুন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান।
পুলিশ জানায়, শাহিনের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৭০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী (২০১৫) এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শাহিন আলম (৩৩) যখন শিশু তখন তার পিতা মো. রইছ উদ্দিন মারা যান। তখন তার তেমন কোনো জমি বা সম্পদ ছিলো না। ২০১০ সালের পূর্বে শাহিন ও তার পরিবারের লোকজন মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। ২০১০ সালের দিকে শাহিন আলম ইয়াবা ব্যবসার অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন। শাহিন মূলত মাদক কারবারের মাধ্যমে অবৈধভাবে দ্রুত অর্থ-বিত্তের মালিক হন। তার কোনো বৈধ আয়ের উৎস ছিল না। তার বিরুদ্ধে ৫টি মাদক মামলা, একটি অস্ত্র মামলাসহ মোট আটটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত শাহিন আলম নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে ১০টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন মাদক দ্বারা উপার্জিত অর্থের লেনদেনের জন্য।
শাহিন আলম তার মাদক থেকে উপার্জিত অবৈধ টাকা দিয়ে তার নিজ গ্রাম গণেশপুর বাজারে জমিসহ ডুপ্লেক্স একটি বাড়ি এবং ৮বিঘা জায়গা ক্রয় করেছেন। তার অবৈধ টাকা দিয়ে নিজ স্ত্রীর নামে একাধিক এফডিআরে টাকা জমা করেছেন। প্রায় ২ কোটি টাকা এলাকাতে সুদভিত্তিক ঋণ দিয়েছেন বলে সূত্রে জানা যায়।
নাম না প্রকাশের শর্তে শাহিনের বিষয়ে এলাকাবাসীরা বলেন, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীবাহিনী গঠন করে তাদের দিয়ে চাঁদাবাজি করে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে মানিলন্ডারিং মামলা হয়েছে তাতে আমরা খুবই খুশি।
স্থানীয়রা আরও জানান, মাদক ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন গরিব মানুষকে সাপ্লায়ার হিসেবে কাজে লাগান শাহিন।
শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার অন্যতম সাক্ষী আ. রহিম বলেন, আমি শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে আমাকে শাহিন তার সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে বাজারে প্রকাশ্যে আমার ওপর হামলা করেছে। এতে অন্যান্য সাক্ষীরা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সাক্ষীরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন তার মাদক কারবারে আরও যারা জড়িত তাদের নামসহ যেনো আদালতে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিল করে ন্যায় বিচার পেতে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করে এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাক্ষী ও তার স্বজনরা বলেন, আমরা আইনের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল ও বিশ্বাস রাখি। যেখানে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন সেখানে মাদক সম্রাট শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার বিচার এদেশের মাটিতে হবেই বলে আশাবাদী।
শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার বিষয়ে সিআইডি হেডকোয়ার্টারের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমে যোগাযোগ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, শাহিনের মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। শিগগির তার তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করা হবে।
আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা শাহীনকে নজরদারিতে রেখেছি। সে কোনো অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। মাদকে জড়িত যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঢাকাটাইমস/০২অক্টোবর/এসএ
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা

কালিয়াকৈরে যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বগুড়ার শেরপুরে অভিমানে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

সাতক্ষীরার ২টি আসনে ২৩ মনোনয়পত্রের মধ্যে একটি বাতিল

পূবাইলে গৃহবধূর আত্মহত্যা

সিলেটের ৬টি আসনে ১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল, বৈধ ৩১

মনোনয়নপত্র সাময়িক বাতিলে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের খুশি হওয়ার কারণ নেই, প্রার্থিতা ফিরবে আপিলে

মানিকগঞ্জ-১: প্রার্থিতা বাতিলের খবরে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদলেন আব্দুল আলী

বাগেরহাটে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
