ধানক্ষেতে ইভার মাথাবিহীন লাশ: হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আপন ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৪:৪৬ | প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:১৪
চাঞ্চল্যকর ইভা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন: পুলিশের হাতে আটক হত্যার মূলপরিকল্পনাকারী আপন ভাই রবিউল।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় গত বুধবার রাতে ধানক্ষেত থেকে স্কুলছাত্রী ইভার মাথাবিহীন বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন পাশের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা খণ্ডিত মাথা। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে গত শুক্রবার নিহত ইভার আপন ভাই রবিউল হাসানকে (১৯) আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন।

রবিউল ছাতক উপজেলার দক্ষিণ কুর্শী গ্রামের মশাহিদ আলীর ছেলে।

ছাতক সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক ও ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশি তৎপরতায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস মামলার রহস্য উদঘাটন করে।

পুলিশ জানায়,গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কুর্শী গ্রামের আতাউর রহমানের ধান ক্ষেতে মাথাবিহীন অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় ইভা বেগম (১০) নামের এক শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিশুটির পিতা মো. মশাহিদ আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলা দায়েরের পর শিশুটির ভাই রবিউল হাসানের কথাবার্তায় সন্দেহজনক মনে হলে তাকে নিবিড়ভাবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায় সে তার বোন ইভাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। রবিউল হাসানসহ দক্ষিণ কুর্শী গ্রামের লিকসন, আক্কল মিয়া, হোসেন একই গ্রামে একটি হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন। জামিনে মুক্ত হয়ে রবিউল হাসান, লিকসন, আক্কলসহ একই গ্রামের আহমেদ আলী (৩৮), মুজিব (৪২) ও লিটন মিলে খুন মামলাটি সহজে আপস-মীমাংসা করার জন্য আরেকটি খুন করে পূর্বের খুন মামলার বাদী পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর রবিউল হাসান তার ছোট বোন ইভাকে মোবাইলের মিনিট কার্ড আনার জন্য গ্রামের একটি দোকানে পাঠায়। মিনিট কার্ড কিনে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা শিশু ইভাকে আক্কলের বাড়িতে নিয়ে যায়। আসামিরা শিশু ইভার মুখ, মাথা ও পা চেপে ধরে একটি রামদা দিয়ে ঘাড়ে কোপ মেরে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছন্ন করে ফেলে। পরবর্তীতে আসামিরা ছুরি দিয়ে শিশু ইভার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করে। আসামিরা শিশু ইভার দেহ আতাউর রহমানের ধানক্ষেতে এবং মাথা লিটনদের জমিতে ফেলে রেখে যায়।

ছাতক সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি রবিউল হাসানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শিশু ইভার মাথা লিটনদের জমি থেকে উদ্ধার করা হয়। শিশু ইভা বেগমকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আসামি রবিউল হাসান বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। আসামিকে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করে দ্রুত অন্যান্য পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা প্রদান করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৮অক্টোবর/প্রতিনিধি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :