তিন মাসে ৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৪:৫২

দেশে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঋণ বিতরণ বাড়িয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ খাতে ৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষিতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বকেয়া। সার্বিকভাবে কৃষি ঋণের খেলাপির হার ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকেরা কখনো ঋণ জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপের মত ঋণ খেলাপির প্রবণতা তাদের মধ্যে একেবারেই নেই।

এই তিন মাসের সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে মোট ১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। ৬৮১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক। আলোচ্য তিন মাসে ডাচ বাংলা ব্যাংক ৪৮৮ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৪৪৬ কোটি এবং আইএফআইসি ব্যাংক ৪৩৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে।

এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পল্লী ও কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৩৯৭ কোটি টাকা।

এদিকে এখন পর্যন্ত বিতরণ করা মোট কৃষি ঋণের স্থিতি ৫৪ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বকেয়া। সার্বিকভাবে কৃষি ঋণের ঋণ খেলাপির হার ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ তিন হাজার ৯৫০ কোটি।

দেশের ব্যাংকগুলো থেকে গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) কৃষকরা ৩২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বিপরীতে তারা পরিশোধ করেছেন ৩৩ হাজার ১০ কোটি টাকা। এর আগেও কৃষকরা ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের চেয়ে বেশি পরিশোধ করেছেন। কিছু কিছু ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বিতরণ করেছে। আবার কিছু ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রায় অর্জন করতে পারেনি। এরকম ব্যর্থ ব্যাংকের সংখ্যা আটটি। এমনকি করোনায় সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যেও কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের চেয়ে আদায় হয়েছে বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। ওই বছর কৃষকরা ২৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করেছেন।

দেশের কৃষকদের দেয়া ঋণ সুবিধার বড় অংশই বিতরণ হচ্ছে এনজিওর মাধ্যমে। ব্যাংক থেকে কৃষকরা ঋণ গ্রহণ করেন সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদে। কিন্তু এনজিওর মাধ্যমে নেয়া ঋণের সুদহার দাঁড়াচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে। প্রান্তিক কৃষকদের কাছে ঋণ পৌঁছার সক্ষমতাই দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক তৈরি করতে পারেনি। এ কারণে ব্যাংকগুলো কৃষি খাতের ঋণের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ এনজিওকে দিয়ে দিচ্ছে। এনজিওগুলো ব্যাংক থেকে ৮ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে দ্বিগুণ-তিন গুণ সুদে বিতরণ করছে।

নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। কম সুদে কৃষকদের হাতে ঋণ পৌঁছাতে এবার ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থার (এমএফআই) ওপর বেসরকারি ব্যাংকের নির্ভরশীলতা আরও কমিয়ে আনা হচ্ছে। আর এ জন্য ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্তত ৫০ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা এতদিন ছিল ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া কৃষিঋণের কত অংশ কোন খাতে দিতে হবে, তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন অর্থবছরের জন্য প্রণীত কৃ‌ষি ঋণ নীতিমালায় বলা হয়, ভবনের ছাদে বিভিন্ন কৃষি কাজ করা একটি নতুন ধারণা। বর্তমানে শহরাঞ্চলে যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত বাড়ির ছাদে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ফুল, ফল ও শাক-সবজির যে বাগান গড়ে তোলা হয় তা ছাদবাগান হিসেবে পরিচিত।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/এএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :