চলমান দাবদাহ ও আমাদের দায়বদ্ধতা

আলী রেজা
| আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৩৯ | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৪

প্রায় দুই সপ্তাহ যাবৎ তীব্র তাপদাহে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জীবন অতীষ্ট হয়ে উঠেছে। ঘরে বাইরে কোথায়ও স্বস্তি নেই। মাঝে মাঝে বৈশাখী হাওয়ার দেখা মিললেও সে হাওয়া স্বস্তি দেয় না। তীব্র রোদ আর গরম হাওয়ায় সবকিছুই উত্তপ্ত হয়ে গেছে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ এপ্রিল মাসে প্রচণ্ড গরম পড়ে। এবার যেন গরম ও দাপদাহের মাত্রা অনেক বেশি তীব্র। এ তীব্রতাকে আমলে নিয়ে ইতোমধ্যেই সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তীব্র গরমে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। শ্বাসকষ্ট ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরাও চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি। এই পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য আমরা মানুষেরাই প্রধানত দায়ী। গাছ কেটে আমরা পরিবেশকে ধ্বংস করেছি। নদী দখল করে, জলাশয় ভরাট করে আমরা কংক্রিটের বহুতল ভবন নির্মাণ করেছি। দেশের সমস্ত রাস্তা পাকা করা হয়েছে। গ্রামকে শহর বানাতে গিয়ে গ্রামকে নষ্ট করা হচ্ছে। প্রতিটি শহর এখন দূষণের শিকার। পার্ক, খেলার মাঠ, বৃক্ষশোভিত উদ্যান একটু-একটু করে প্রতিনিয়ত দখল হয়ে যাচ্ছে। সর্বত্র বাতাস দূষিত। কোথাও নির্মল বায়ু নেই। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন কৌশল খোঁজার দায়িত্বে নিয়োজিত হিট অফিসার বলেছেন, ‘শুধু গাছ লাগালেই হবে না। আমাদের শহরগুলোতে রাস্তার ধারে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না।’ বিদ্যমান উদ্যানের বৃক্ষরাজি রক্ষণাবেক্ষণ যেমন জরুরি তেমনি নতুন করে উদ্যান সৃষ্টি করাও জরুরি। শহরের ফাঁকা ও পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে হিট অফিসার বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক কিছুই বক্তৃতা ও বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যায়। কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে ক্রমশ শহরের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। জীবিকার তাগিদে সারা দেশ থেকে মানুষ শহরে আসে। এই শহর যদি মানুষের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা না যায়, তবে তা জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।

ইদানীং শুধু রাজধানী কিংবা বিভাগীয় শহর নয়; জেলা শহরগুলোতেও বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে দেদার। কিন্তু বহুতল ভবন নির্মাণের নীতিমালা মানা হচ্ছে না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই জানা যাচ্ছে ভবন তৈরির অনিয়মের বিষয়। চতুর্দিকে প্রয়োজনীয় জায়গা ছাড়ছেন না কেউ। গায়ে গায়ে লেগে থাকা এই ভবনগুলোতে নেই মুক্তবাতাস চলাচলের ব্যবস্থা। কংক্রিটের এই ভবনগুলোতে তাপ আটকে গিয়ে চতুর্দিকের বাতাসকে উত্তপ্ত করে তুলছে। গাছ না থাকায় রাস্তা-ঘাট বা খোলা জায়গায় তাপনিরোধ হচ্ছে না। তাপ আটকে গিয়ে পিচঢালা রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা যাচ্ছে। শহরে সবুজায়নের ব্যবস্থা থাকলে মানুষ তাপদাহ থেকে অনেকটা রক্ষা পেতো। রক্ষা পেতো জীববৈচিত্র্য। যুগে যুগেই দেখা গেছে প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে মানুষের কোনো লাভ হয়নি। মানুষ যত প্রকৃতিকে ধ্বংস করবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ততই মানুষকে আক্রান্ত করবে। প্রকৃতির এই প্রতিশোধ নীরব ও অনিবার্য।

আমরা আমাদের সাময়িক আরামের জন্য অফিস-আদালতে, বাণিজ্যিক ভবন বা সুপার মলগুলোতে, ব্যক্তিগত গাড়িতে এমনকি বাসায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করেছি। ভেতরে শীতল বাতাসে থেকে বাইরের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলছি। এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বাইরের বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে আমরা যখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ জোন থেকে বের হচ্ছি সঙ্গে সঙ্গে দাপদাহ আমাদের শরীর আক্রান্ত হচ্ছে। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে আখেরে আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে। সবুজের আচ্ছাদনে থাকা এক সময়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ঢাকা শহর আজ যানবাহন ও বহুতল ভবনের চাপে পিষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যানবাহনের ধোঁয়া ও জ্বালানি পেড়ানো উত্তাপে শহরের এখন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। এপ্রিলের মাঝামাঝি ঢাকা শহরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রাও প্রায় কাছাকাছি। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে ১৯৬৫ সালের পর অর্থাৎ ৫৮ বছরের মধ্যে এটিই নাকি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এখনই সচেতন না হলে প্রকৃতির রোষ থেকে আমরা কেউ রক্ষা পাব না। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ঠেকাতে এখন সারাবিশ্ব তৎপর। গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা করে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার চেষ্টা চলছে। এই প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। অথচ সুজলা-সুফলা বাংলাদেশকে সবুজ শ্যামলিমায় ঢেকে রাখা কোনো কঠিন কাজ নয়। প্রতিটি ভবনের সামনে উদ্যানের জন্য নির্ধারিত জায়গা রেখে সেখানে বনায়ন করা সম্ভব। প্রতিটি কল-কারখানা ও বৃহৎ স্থাপনার চতুর্দিকে কিছু খালি জায়গা রেখে সেখানেও বনায়ন সম্ভব। ইদানীং আবাসিক ভবনের ছাদে ছাদ-বাগান বা ছাদ-কৃষির প্রচলন দেখা যাচ্ছে। এটি একটি শুভলক্ষণ। শিল্পায়ন ও নগরায়ণের প্রভাবে স্বাভাবিকভাবে পরিবেশগত পরিবর্তন হয়। এ পরিবর্তনকে জীবনযাত্রার অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রহণ করতে হবে। আমি আমার এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়বো নাÑ এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমার বাসা-বাড়ির সংলগ্ন ছেড়ে দেওয়া জাযগাটুকু তো আমিই ব্যবহার করবো। আমার বাসা-বাড়ি সংলগ্ন বৃক্ষ থেকে নির্গত অক্সিজেন তো আমিই সবার আগে গ্রহণ করবো। সুতরাং এ ব্যাপারে কৃপণতা নয়। এই কৃপণতার ফলে পরবর্তী প্রজন্ম কিন্তু আমাদের ক্ষমা করবে না। ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে’ যেতে হবে আমাদেরকেই।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে মাঝে মাঝেই দাবানলে বনাঞ্চল পুড়ে যাওয়ার খবর শোনা যায়। পৃথিবীর ফুসফুস অ্যামাজন বন নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাণিজ্যিক কারণে এখন বাংলাদেশসহ প্রতিটি রাষ্ট্রেই কার্বন নিঃসরণ ও জ্বালানি পোড়ানো বেড়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদে এর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে কেউ ভাবছে না। উন্নত দেশগুলো বেশি কার্বন নিঃসরণ করলেও অনুন্নত দেশগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ অনুন্নত দেশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও অনুন্নত। এক সময় নদীমাতৃক বাংলাদেশে ছোটো-বড়ো অনেক নদী ছিল। বিল-ঝিল জলাশয় ছিল দেশে সর্বত্র। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নির্বিচারে নদী ও জলাশয় দখলের ফলে এখন সেসব নদী-জলাশয় বিলুপ্তির পথে। পরিবেশবান্ধর ছায়াবৃক্ষের বদলে সারা দেশে লাগানো হয়েছে দ্রুতবর্ধনশীল বিশেষ প্রজাতির বৃক্ষ যেগুলো অনেক সময় পরিবেশ রক্ষার বদলে পরিবেশের ক্ষতি করছে। এসব বৃক্ষে পাখিরাও বাসা তৈরি করে থাকতে পারছে না।

শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে পরিবেশ দূষণ হয়। বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। জ্বালানি পোড়ানোর ফলে তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। গাছপালা এই কার্বন ও তাপ শোষণ করে এবং প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে। আমরা জানি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য দেশের মোট আয়তনের অন্তত ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশে বনাঞ্চল অনেক কমে গেছে। গত কয়েক বছরে সড়ক সংস্কার বা রাস্তা বড়ো করতে গিয়ে রাস্তার দুই পাশের বয়সী বৃক্ষগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। নতুন করে যেসব গাছ লাগানো হচ্ছে তা পরিচর্যার অভাবে বড়ো হয়ে উঠছে না। এতে করে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে গিয়ে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে বৃষ্টিপাতও কম হচ্ছে। আগে এ সময় ঝড়-বৃষ্টি ও কালবৈশাখীর তাণ্ডব দেখা যেত। এখন শুধুই গরমের তাণ্ডব। রাস্তার প্রাণীরাও আরামের আশ্রয় পাচ্ছে না কোথায়ও।

শহরগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ১০ লাখ লোকের বসবাসের কারণে যেকোনো এলাকার তাপমাত্রা ১ দশমিক ৮ থেকে ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেড়ে যেতে পারে। মানুষের শরীরেরও তাপ আছে যাকে বলা হয় মেটাবলিক হিট। প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এ তাপমাত্রার পরিমাণ প্রায় ১০০ ওয়াট। ফলে একটি স্থানে যত বেশি লোক বসবাস করবে সেই স্থানের তাপমাত্রা ততই বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ঢাকা শহরের লোকসংখ্যা দুই কোটিরও বেশি। এই বিশাল জনগোষ্ঠী তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে তাপ উৎপাদন করছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে ঢাকা শহরে প্রায় ২০ লাখ পরিবার ২০ লাখ চুলায় গড়ে প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা করে রান্না করে। এছাড়াও হোটেল-রেস্তোরায় বড়ো বড়ো চুলায় রান্না হয়। যানবাহনের জ্বালানি পোড়ানোর বিষয়টি তো আছেই। রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় ৫২ লক্ষ গাড়ি থেকে প্রতিনিয়ত কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। যানজটের কারণে গাড়িগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইঞ্জিন চালু রেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এসব ইঞ্জিন থেকে প্রচুর পরিমাণে তাপ নির্গত হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়। শহরের পিচঢালা রাস্তাগুলো প্রচুর পরিমাণে তাপ ধরে রাখে। শহরের অত্যাধুনিক ভবনগুলোতে এখন প্রচুর পরিমাণে গ্লাসের ব্যবহার হয়। শুধু জানালা নয়; এখন পুরো বিল্ডিং গ্লাসে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। দৃষ্টিনন্দন এ গ্লাসগুলো প্রচুর পরিমাণে তাপ ধারণ করে। এসব ভবনে ব্যবহৃত এসি থেকেও তাপ নিঃসৃত হয়ে তা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে নানা উৎস থেকে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অপরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রমের ফলে যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতে নিরাপদে বেঁচে থাকাই অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। এ গবেষণায় দেখা গেছে ২০৫০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে বিশে^র প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। এই তীব্র তাপপ্রবাহ শহরাঞ্চলে হবে সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শুধু ঢাকা শহরেই উচ্চ তাপমাত্রার কারণে প্রতি বছর ৬০০ কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ এ ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজর ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে অন্য যেকোনো শহরের তুলনায় ঢাকা শহরের মানুষের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাপমাত্রা কমানোর উদ্যোগ না নিলে এ ক্ষতির মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। তাছাড়া জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি তো আছেই। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা, নানা ধরনের সংক্রামক রোগ, ডিহাইড্রেশন, অ্যালার্জি, হিটস্ট্রোক- এসব স্বাস্থ্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গ্রীষ্মকাল ক্রমশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এমতাবস্থায় ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য টেকসই ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শহরের প্রতিটি খালি জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। রাস্তার বিভাজনে শুধুমাত্র শোভাবর্ধনকারী গাছ নয়; মাটির ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ছায়া দানকারী গাছও লাগাতে হবে। ছাদবাগান বাড়াতে হবে। নদী ও জলাশয় দখলমুক্ত করে জলাভূমির পরিমাণ বাড়াতে হবে। কোনো ডেভেলপার কোম্পানি জলাভূমি ভরাট করে যেন কোনো আবাসিক প্রকল্প গড়ে তুলতে না পারে সেদিকে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে। জলাভূমি ভরাট করে কোনো সরকারি স্থাপনা নির্মাণ থেকেও বিরত থাকতে হবে। অবকাঠামো বা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যত্রতত্র প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য পোড়ানো থেকে বিরত থাকা জরুরি। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যকে যথাযথ ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জননীতি অনুসরণ করে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা করতে হবে। এসব বিষয়ে ছাড় দেওয়া মানে নিজেকে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া।

আলী রেজা: কলাম লেখক, গবেষক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :