হরতাল-অবরোধের প্রভাব, পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৩১

দেশের রাজনৈতিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে হুমকিতে পড়েছে অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিনেও পর্যটকশূন্য পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা।

মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিনদিন কুয়াকাটা পর্যটন নগরীতে রয়েছে সুনশান নিরবতা। খালি পড়ে আছে সৈকতে রাখা ছাতা বেঞ্চি। অলস সময় পার করছেন মোটরবাইক, ফটোগ্রাফার, স্পিডবোড চালক, ঝিনুক-আচার, ফিশ-ফ্রাই ব্যবয়াসীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বুকিং ছিল না হোটেল মোটেলের ৯৫ শতাংশ কক্ষ। মৌসুমের শুরুতেই সৈকত এভাবে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় হতাশা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

এর আগে চলতি মাসের ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ১ দিনের হরতালে তেমন পর্যটকের আনাগোনা ছিল না কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবেও বাধাগ্রস্ত হয় পর্যটন খাত। এবার মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ডাকা টানা তিনদিনের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে মৌসুমের শুরুতেই ধাক্কা লেগেছে পর্যটন শিল্পে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কোটি কোটি টাকার আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছে।

তিনদিনের টানা অবরোধ কর্মসূচিতে অভ্যন্তরীন রুটে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও কুয়াকাটা থেকে প্রথম দিনে দূরপাল্লার নয়টি ও দ্বিতীয় দিনে ১৩টি ট্রিপ ছাড়া হয় নির্ধারিত সময়ে রাত ১০টায়। তৃতীয় দিন সকাল থেকে রীতিমতো চলাচল শুরু করে সকল বাস। শুরু থেকেই পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় প্রতিটি বাসে দুজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছে বলে জানা যায়। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে পুলিশ সদস্যরা।

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের সেবা দানে রয়েছে প্রায় হাজারো মোটরবাইক, সৈকতদের শতাধিক রয়েছে ঝিনুক ব্যবসায়ী, দুই শতাধিক ফটোগ্রাফার, আচার, শুটকি, ফিস-ফ্রাই, চা-পান, ডাব, সী-বোট, স্পীডবোট, ইজিবাইক, বীচ বাইক, ওয়াটার বাইক, ঘোড়া ব্যবয়াসীসহ কয়েক হাজার ব্যবসায়ীরা পড়েছে আর্থিক লোকসানের মুখে। টানা অবরোধ কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলো অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন পাড় করেছেন।

বেঞ্চ ব্যবসায়ী সাহিন বলেন, জামায়াত-বিএনপির অবরোধের কারণে পর্যটক নেই, মারা পড়ছি আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা। গাড়িঘোড়া যা চলে তা বিএনপির ডাকা হরতালের কারণে বাসে লোকজন তেমন উঠে না। মহিপুর সুগন্ধা পরিবহনের কাউন্টার পরিচালক মো. ছিদ্দিক মোল্লা জানান, লোকাল বাস ঠিকঠাক মতো চল্লেও দূরপাল্লা বাস তেমন চলেনি।

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, পর্যটকরা যখন কোনো দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে যান তখন সবার আগে তারা যাতায়াত ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেন। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশের যে পরিস্থিতি শুরু হয়েছে তাতে কোন পর্যটকই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া আগামী দিনে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হবে না। এর প্রভাব পড়বে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায়ও।

হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ বলেন, বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরেয়ে নিয়েছে। এ সংকট চলতে থাকলে আমরা অচিরেই পথে বসে যাব।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, কুয়াকাটায় গত তিনদিনে তেমন কোনো পর্যটকের সমাগম ছিলনা। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ।

(ঢাকা টাইমস/০২নভেম্বর/প্রতিনিধি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :