নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই ইলিশে সয়লাব বাজার

আব্দুল কাইয়ুম, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
 | প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৪

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন নদ-নদীতে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে গিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন স্থানীয় জেলেরা। মা ইলিশের বাধাঁহীন প্রজননে নিষেধাজ্ঞা পালন শেষে সরগরম হয়ে উঠেছে উপকূলের মৎস্য বন্দরসহ উপজেলার ৪০টি জেলেপল্লী। কর্ম্যচাঞ্চল্যতা ফিরেছে প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শত শত জেলে ট্রলার সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলার বোঝাই করে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার ব্যাবধানে শুক্রবার ভোর রাত থেকেই ইলিশসহ অন্যান্য মাছে সয়লাব ছিল পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এনিয়ে চলছে জেলে ও মৎস্যজীবীদের মাঝে নানা আলোচনা। অবরোধ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্দরে ট্রলার বোঝাই করে মাছ নিয়ে ঘাটে আসে অন্তত অর্ধশত ট্রলার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মৎস্যজীবীরা জানান, যেসকল ট্রলার শুক্রবার ভোর রাতেই ঘাটে ফিরেছে এসকল ট্রলার অবরোধ শেষ হওয়ার ১ সপ্তাহ আগেই রাতের আধারে গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে চলে যায়। অবরোধের সময়সীমা পার হবার সঙ্গে সঙ্গে রাতের আঁধারে গভীর সমুদ্র থেকে আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এসে নোঙর করে। শুক্রবার থেকেই এসব ট্রলার থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উত্তোলন, কেনাবেচা এবং বাজারজাতের জন্য প্যাকেট করে পাঠানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন মোকামে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন বৃহস্পতিবার রাতে অবরোধ শেষ হতেই ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে গভীর সমুদ্র থেকে ট্রলার বোঝাই করে মাছ নিয়ে ঘাটে এলো কিভাবে?

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গভীর সমুদ্রে গিয়ে জেলেরা পাচ্ছে মাঝারি ও বড় সাইজের ইলিশ। দীর্ঘদিন কর্মহীন অলস সময় পার করে সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে ঘাটে ফিরে মৎস্যজীবীদের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি। সমুদ্র তীরবর্তী উপকূলের জেলেদের জালেও মিলেছে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জেলেরা জানান, বর্তমানে সাগরে গিয়ে যে পরিমান ইলিশ মাছ পেয়েছেন একনাগাড়ে এমন মাছ পেলে কেটে যাবে তাদের দুর্দিন।

উপকূলের জেলে ইউসুব জানান, এবছর অনেকবার বৈরী আবহাওয়া ও দুইবার নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশি সময় সাগরে মাছ ধরতে যাইতে পারিনাই। তবে অবরোধ শেষ হইতেই সাগরে গিয়া কিছু মাছ পাইছি।

জেলে ইউসুব আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমাগো পরিবারে হগলেই বহু বছর ধরে মাছ ধইরা সংসার চালায়। গেল কয়েক বছর সাগরে ঠিকমতো মাছ পাইনা। অনেক ঋণ অইয়া গেছে। এবার সাগরে অন্যান্য বছরের তুলনায় মাছ কম পাইছি। আমাগো তিনবেলা ডাল-ভাত খাইতেই অনেক কষ্ট হইতাছে। এই পেশায় এহন আর ভালোদিন যাইতে আছে না আমাগো। মহাজনের দাদনের টাহা শোধ করতে পারলে আর সাগরে যামু না মাছ ধরতে। এইরকম চলতে থাকলে আমাগো সত্যি মরা ছাড়া উপায় নাই।

আলীপুর বন্দরের মৎস্য ব্যবসায়ী মীর মিজান জানান, ২২ দিনের অবরোধ শেষে আমাদের আড়তে প্রচুর মাছ এসেছে। তবে আগের দরেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। যদি আরও বেশি মাছ জেলেদের জালে ধরা পরে হয়তো দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে যে পরিমান মাছ আসছে তাতে সামনে ইলিশের বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, অবরোধ সঠিকভাবে পালন করায় জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই গভীর সমুদ্রে জেলেদের মাছ শিকারে যাওয়ার বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/০৪ নভেম্বর/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :