ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন: প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৩ | প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল -আশুগঞ্জ) উপনির্বাচনে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। তার ভাষ্য, ‘আমাকে পরাজিত করতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে।’

এই প্রার্থী বলেন, ‘ভোটার তালিকায় গরমিল করাসহ আমার ভোটারদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আশুগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা ব্যালট পেপারে সিল মেরে ভরে ফেলেছে। অন্তত সাতটি কেন্দ্রে সূক্ষ্ম কারচুপি চলেছে।’

জিয়াউল হক মৃধার অভিযোগ, ‘সরাইলের প্রায় সবকটি ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহকৃত ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। সূক্ষ্ম কারচুপির অংশ হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবেই এটি করা হয়েছে। এছাড়া আশুগঞ্জের শরীফপুর, আন্দিদিল, যাত্রাপুর, বড়তল্লা, টেকেরপাড়, চরচারতলা ও নাওঘাট কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। আমি শরীফপুর কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’

অভিযোগ সম্পর্কে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, ‘জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। যেহেতু নির্বাচনি ব্যস্ততা, সময় কম, তাই লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে যে তালিকা আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকাই আমরা ভোটের সরঞ্জামের সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে পাঠিয়েছি। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়, ভিত্তিহীন।’ ভোটার উপস্থিতি কম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই আসনে তিনবার নির্বাচন হচ্ছে। সে কারণে ভোটারদের আগ্রহ কিছুটা কম।’

নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগটি মিথ্যা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। কোথাও কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন চলছে।’

আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা কামিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভোটাররা জাল ভোট দিতে এসেছেন। পরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিষয়টি সন্দেহ হলে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

রাসেল নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী জাল ভোট দিতে এলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে বলে, ‘চেয়ারম্যান বলেছেন সে জন্য ভোট দিতে এসেছি।’

আশুগঞ্জ উপজেলার রওশন আরা জলিল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট না দিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন মমতা বেগম। তিনি জানান, আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার স্লিপ দেওয়া হতো, এবার সেটা করা হয়নি। সে কারণে তিনি ভোট দিতে পারেননি। যারা নামের তালিকা নিয়ে বাইরে বসে আছেন, তারাও নাম বের করে দিতে পারছেন না। ভেতরে গেলে বলা হচ্ছে ভোটার নম্বর নিয়ে আসতে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী। আওয়ামী লীগের মো. শাহজাহান আলম (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. আবদুল হামিদ (লাঙ্গল), জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল (গোলাপ ফুল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. রাজ্জাক হোসেন (আম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (কলার ছড়ি)।

ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। চলছে গণনা। ভোটকেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকার নিরাপত্তায় ৮ শতাধিক পুলিশ, ৭ প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব, আনসার, জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২ জন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া মৃত্যুবরণ করায় আসনটি শূন্য হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানা যাবে এই আসনের নতুন সংসদ সদস্যের নাম।

(ঢাকা টাইমস/০৫নভেম্বর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :