ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে: সেই যুবদল নেতাকে চিকিৎসা দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

যশোর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি অসুস্থ আমিনুর রহমানকে ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আমিনুর রহমানকে ১০ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের এই রায় বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।
আদালতে আমিনুরের সুচিকিৎসা চেয়ে কার রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বদরুদ্দোজা বাদল, আবদুল জব্বার ভূইয়া, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মনিরুজ্জামান আসাদ, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত যুবদলের সহ-সভাপতি মো. আমিনুর রহমান মধুকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সব থেকে নির্মম হলো তার চিকিৎসা সমাপ্ত না করে আবার কারাগারে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়। এই নির্মমতার বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি। হাইকোর্ট ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। একই সাথে তাকে পর্যাপ্ত ও সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যারা সরকার বিরোধী মতের আছেন তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্যাতন ও নিগৃহীত করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর হাসপাতালে মেঝেতে রেখে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত যশোরের যু্বদল নেতা আমিনুর রহমানকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এসময় স্বপ্রণোদিত আদেশ চাইলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিট আকারে আবেদন করার পরামর্শ দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার মো. আমিনুর রহমানের স্ত্রী রাহাত আরা খান আমিনুরের সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পর আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে চারটি মামলা করে পুলিশ। ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ কলেজ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এসময়ও তার পায়ের ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি। এমনকি খাওয়ার সময়ও হাতকড়া খুলে দেয়নি পুলিশ। এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হলে আইনজীবীরা হাইকোর্টের নজরে আনেন।
(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/এসএম)

মন্তব্য করুন