হামাস নেতার বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনোয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। তবে তিনি বাড়িতে আছেন কিনা জানা যায়নি।
বুধবার নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, গতকালই আমি বলেছিলাম, গাজা ভূখণ্ডের যে কোনো জায়গায় আমাদের সেনা পৌঁছাতে পারবে। আজ আমাদের সেনা সিনোয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে। হতেই পারে তিনি ওখানে নেই। তিনি পালিয়েও যেতে পারেন। তবে আজ না হয় কাল, তাকে ধরা হবেই, যা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনোয়ারের বাড়ি দক্ষিণ গাজায় খান ইউনিস শহরে বলে জানা গেছে। বুধবার সেখানে ইসরায়েলের সেনা খুবই তৎপর ছিল। ইসরায়েলের ধারণা, হামাসের নেতারা এখন দক্ষিণ গাজায় আছেন। কারণ, প্রথমদিকে লড়াইটা উত্তর গাজায় সীমাবদ্ধ ছিল। তারা তখন দক্ষিণ গাজায় চলে এসেছেন।
নেতানিয়াহুর একজন সিনিয়র উপদেষ্টা এই অভিযানকে ‘প্রতীকী বিজয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সিনওয়ার এবং তার পুরো কমান্ড টিমের ওপর লক্ষ্য রাখছে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, সিনওয়ার ৭ অক্টোবরের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন, ঠিক যেমন ওসামা বিন লাদেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পিছনে ছিলেন।
প্রসঙ্গত, হামাসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সিনওয়ার দুই দশকের বেশি সময় ইসরায়েলের জেলে ছিলেন। দুই ইসরায়েলি সেনা ও তাদের চারজন ফিলিস্তিনি সঙ্গীকে খুন করার দায়ে তার শাস্তি হয়েছিল।
২০১১ সালে ইসরায়েলের সেনা জিলাদ শালিটের মুক্তির বিনিময়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তার মধ্যে সিনোয়ারও ছিল। ২০১৭ সালে সিনোয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হন।
এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে এক সপ্তাহ যুদ্ধবিরতির পর শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় আবার আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। তার আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী মূলত গাজার উত্তরভাগেই অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু এখন দক্ষিণ গাজাতেও বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করছে ইসরায়েল।
এর আগে উত্তর গাজায় অভিযানের সময় গাজাবাসীকে দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল। সেসময় গাজার বেসামরিক মানুষের একটা বড় অংশ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দক্ষিণ গাজায় চলে গেছিল। এখন দক্ষিণ গাজায়ও ইসরায়েল হামলা জোরদার করেছে। চালানো হচ্ছে স্থল অভিযান। এর ফলে পুরো গাজা এখন কার্যত অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনা দক্ষিণ গাজায় খান ইউনিস শহরের পূর্বদিকে গেছে। আকাশপথে হামলার পাশাপাশি ট্যাংক নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে।
হামাসের সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একই সময়ের মধ্যে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজারে।
(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/এমআর)