দিনাজপুরে জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দিনাজপুরে শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এর প্রভাবে জেঁকে বসেছে শীত। বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জনপদ। হাড়কাঁপা শীতে জবুথবু অবস্থা শ্রমজীবী মানুষের।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সকাল ৯টায় রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। রবিবার বা সোমবার জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও জানান তারা।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকে বইতে শুরু করে হিমেল বাতাস। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা। সড়ক-মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। তবে হাড়কাঁপানো শীতে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের আয় উপার্জনে পড়েছে ভাটা। অতিরিক্ত শীতের কারণে ঠিকভাবে কাজে যেতে পারছেন না তারা। কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে একটু দেরিতে বের হলেও কাজ না পেয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে।
ষষ্ঠিতলার শ্রম বাজারে অপেক্ষমাণ বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকার আলামিন আলী জানান, বয়স বেড়ে গেছে। ঠান্ডার কারণে সকালে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। দেরিতে আসায় কাজ পাইনি।
দক্ষিণ কোতোয়ালির মোস্তাকিম বলেন, ‘কাজে না আসিলে উপার্জন হয় না। খালি হাতে বাড়ি ফিরিবা হয়? আবার এই ঠান্ডায় সকালে বাড়ি থেকে বাইর হওয়াটাও মুশকিল। হামার গরিবের কোনো উপায় নাই। হামার মতো খেটে খাওয়া মানুষের এখন খুবই কষ্ট।'
এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বড় ময়দানের হকার্স মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান ও বিপণিবিতানে গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে।
আবার ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগের প্রভাবও বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালসহ অন্য হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ।
শীত ও কুয়াশা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রভাব পড়েছে কৃষি খাতেও। নষ্ট হচ্ছে আলু এবং আগাম বীজতলা। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
শীত বেশি পড়লে আলুর গোড়া পচা রোগ এবং বীজতলার চারা বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. মতিউর রহমান।
এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে জেলায় দুই তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/পিএস)