ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৮
অ- অ+

ভাসানটেক সরকারি কলেজে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৩ যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে। ১৪ই ডিসেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার দিনের অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল সূর্যোদয়লগ্নে যথাযথ সম্মানের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণ, ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ স্মারক ম্যুরালে পুষ্পস্তবক প্রদান করার পাশাপাশি কলেজের স্বাধীনতা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভার। সভার শুরুতেই জাতীয়সংগীত পরিবেশন, শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন,শিক্ষার্থীদের বক্তব্য প্রদানসহ শিক্ষকগণ ও অতিথিবৃন্দের আলোচনা এবং শহীদ জায়া সুলতানা নাজমুল হককে সম্মাননা প্রদান ও স্মৃতিচারণায় অংশগ্রহণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল হকের সহধর্মিনী সুলতানা নাজমুল হক। সভাপতিত্ব করেন ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুদীপ্ত হাননান। স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নূপুর দত্ত। আলোচনায় অংশ নেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সেলিনা আক্তার,শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুন রেজা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া শারমিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সমীরণ সরকার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মোহন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসমা আহসান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তাগণ বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে,তা নিশ্চিত করা। তারা বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসটি মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। বুদ্ধিজীবী দিবস সম্পর্কে যখন তরুণ প্রজন্ম জানবে তখনই তাদের কাছে উদযাপনের পরিবর্তে এটা স্মরণের দিন হবে। যারা একটি স্বাধীন উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখান, স্বাধীনতা ঠিক আগে আগে তাদের হত্যা করা হয়েছিল। বুদ্ধিজীবী দিবসটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণারও দাবি জানান আলোচকগণ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল হকের সহধর্মিনী সুলতানা নাজমুল হক স্মরণ ও সম্মাননা আয়োজনে কলেজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বিজয়ের দুই দিন আগে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার, স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। তবে স্বাধীনতা বিরোধীরা বাঙালিদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। অশ্রুসজল আবেগী ভাষায় তিনি জানান, ১০ই ডিসেম্বর রাতে আল বদরদের সঙ্গে নিয়ে পাক-আর্মি বাসায় প্রবেশ করে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেয় আমার স্বামীকে। এরপর আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আলোচনাকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মোহন বুদ্ধিজীবীদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে আরো বেশি গুরুত্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধসহ বুদ্ধিজীবী হত্যার বিষয়গুলো উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি একাত্তরের পূর্বাপর শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকার মূল্যায়নপূর্বক গণহত্যাগুলোর ইতিহাসও আনতে হবে তাদের সামনে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে, বাসায় বাবা-মার সঙ্গে গল্পে, বন্ধুদের আড্ডায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এগুলো আরও বেশি করে আলোচনায় আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় দলমত নির্বিশেষে বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস যখন শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম জানতে পারবে, তখনই এই স্মরণের উদযাপনটা হবে যথার্থ ও সার্থক।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির আন্দোলনের মুখে পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহার
বাংলামোটরে এনসিপির জুলাই চিত্র প্রদর্শনীর গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
তাড়াশে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়ার অভিযোগ
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা