মা-বাবার কোলে ফেরত দেওয়া হল চুয়াডাঙ্গার সেই পুষ্পকে

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৯

পুষ্পকে পেয়ে তার মা-বাবা ও পরিবারের সবাই খুশি। স্বামীর উপর অভিমান করেই পুষ্পকে অন্যের কোলে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরেছিল পাপিয়া খাতুন। ঠিকানা গোপন রেখে পুষ্পকে অন্যের হাতে তুলে দিলেও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় পুষ্প ফিরে গেল তার আপন ঠিকানায়।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুষ্পকে তার মা-বাবার কোলে তুলে দিয়েছেন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাজ্জাদ হোসেন, জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার সানোয়ার হোসেন ও সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মৌমিতা পারভীনসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে প্রসব বেদনা উঠলে সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন ডিহি কেষ্টপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানেই কন্যা সন্তান প্রসব করেন পাপিয়া। পরে তাকে ভর্তি করা হয় গাইনি ওয়ার্ডে। কিছুক্ষণ পর কন্যা সন্তানকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ছত্রপাড়া গ্রামের বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান পাপিয়া খাতুন, তার বাবা আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের বড় পুটিমারি গ্রামের শুকুর আলী ও তার স্ত্রী বুলবুলি খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ডিহি কেষ্টপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আলমডাঙ্গা উপজেলার ছোট পুটিমারি গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে পাপিয়া খাতুনের। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে ৯ বছর বয়সি আলফি ও ৩ বছরের ফাতেমা খাতুন নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আলফি ডিহি কেষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। পাপিয়া খাতুন পুনরায় সন্তান সম্ভবা হলে গত নয় মাস ধরে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। পাপিয়া খাতুন তার বাবার বাড়িতে থাকলেও আলমগীর তার স্ত্রী

সন্তানদের ঠিকমতো খোঁজ নিতেন না। গেল ২০দিন আগে মোবাইল ফোনে স্ত্রী সন্তানদের খোঁজ নিলেও বৃহস্পতিবার পাপিয়া খাতুনের সন্তান হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।

পাপিয়া খাতুন বলেন, আমার দুই মেয়ের পর আবার মেয়ে সন্তান হয়। আমি ইচ্ছে করেই তাকে আরেকজনের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। এখন মেয়েকে ফিরে পেয়ে আমি খুশি।

আলমগীর হোসেনের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সন্তানের বিষয়ে পাপিয়ার কাছে জানতে চাইলে সে বলে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে মৃত কন্যা সন্তান হয়েছে। ওয়াশ করে ডেলিভারি করার কারণে সন্তানকে কেটে বের করা হয়েছে।

সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, শুক্রবার সকালে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে আমরা সরাসরি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আমরা পুষ্পকে ফিরে পাই।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, নবজাতকের আসল পরিচয় জানার পর আমরা নবজাতককে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। আমরা নবজাতকের নিয়মিত খোঁজ রাখবো এবং প্রয়োজন হলে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :