হরিণাকুণ্ডুর অবৈধ সীসা কারখানা সিলগালা, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চারাতলা এলাকায় স্থাপিত অবৈধ সীসা কারখানা সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারখানাটি সিলগালাসহ কারখানা মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপমা রায়।
অভিযানের সময় ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় তিন বছর ধরে চারাতলা বাজারের পাশে পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ডালিম মণ্ডল তার জমি ভাড়া দিয়ে গাইবান্ধা জেলার মশিয়ার রহমানকে অবৈধ কারখানা পরিচালনা করতে সহায়তা করে আসছিলেন। মশিয়ার রহমান কারখানায় পুরোনো ব্যাটারি থেকে সীসা সংগ্রহের কাজ করতেন। এই কাজ করার সময় এসিডের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছিল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শিতলী গ্রামের আলো জোয়ার্দার অভিযোগ করেন, বুধবার ওই কারখানার পাশে তার ৮টি গরু ঘাস খাচ্ছিল। বিষক্রিয়ায় তার গরুর পাল অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ি আনার পর তিনটি গরু মারা যায়। বাকী পাঁচটি গরু তড়িঘড়ি করে স্থানীয় ইবাদত কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মকলেছুর রহমান জানান, এর আগে ভালকী গ্রামের খেলাফত ও পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কলিম উদ্দীনসহ একাধিক কৃষকের ১০/১২টি গরু মারা গেছে। এসব গরুর দাম প্রায় ১৫ লাখ টাকা হবে।
এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সীসা কারখানাটি উচ্ছেদের জন্য বহুবার হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রশাসন ও ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানালেও অদৃশ্য কারণে এতোদিন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অবশেষে বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারখানাটি সিলগালা করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার মশিয়ার রহমান এর আগে সদর উপজেলার আসাননগর, বংকিরা, বৈডাঙ্গা ও হরিশংকরপুর গ্রামে এই কারখানা স্থাপনের চেষ্টা করে গ্রামবাসীর প্রবল বাধার মুখে বিতাড়িত হয়েছেন।
জানতে চাইলে কারখানা পরিচালক মশিয়ার রহমান জানান, ‘তিনি ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে এই কারখখানা চালিয়ে আসছিলেন। তার টাকা সবার পকেটে আছে। তিনি দাবি করেন ৪০ জায়গায় তিনি মাসিক টাকা দিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন’।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান জানান, আমার লোকবল নেই। একটি অভিযান পরিচালনা করতে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ। কিন্তু অফিসের কোনো বরাদ্দ নেই। যে কারণে অভিযোগ পেলেই অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না।
(ঢাকাটাইমস/১৪মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)