ইসরায়েলি হামলা বন্ধে কোনো ব্যবস্থা কি নেবে না বিবেকবান বিশ্ব!

আলী হাসান
| আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৯ | প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৮

মানবতাবিরোধী এক বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চল আজ প্রায় বিধ্বস্ত, মানবতা সেখানে ভূ-লুণ্ঠিত। ঠিক এই সময়ে ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বে আজ পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বাংলাদেশ. ভারত, পাকিস্তানসহ প্রাচ্যদেশীয় দেশগুলোতে আজ সর্বশেষ রমজান পালন শেষে আগামীকাল পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক যে- মুসলমান ধর্ম সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজান মাসজুড়েও থেমে ছিল না ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিভিন্ন শহরে নারকীয় ইসরায়েলি বর্বর হামলা। এটা সকলের জানা- ইসরায়েলি বর্বরতা সকল সীমাকে অতিক্রম করেছে ইতোমধ্যেই। ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চল এখন এক মৃত্যুপুরীর নাম। প্রতিদিন সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ মারা যাচ্ছে ইসরায়েলি দানবদের বিরামহীন বোমা হামলায়। সভ্যতার মুখোশপরা আধুনিক উন্নত বিশ্ব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে কীভাবে অসহায়ত্বের সর্বশেষ ধাপে পতিত হয়ে ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার বোমা হামলায় গাজা অঞ্চলের নিরীহ নারী-পুরুষ ও শিশুরা কীভাবে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। দীর্ঘ ছয় মাস সময় ধরে নৃশংস ইসরায়েলি সেনাদের তাণ্ডব চলছে সেখানে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় বর্তমানে নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে বেশ আগেই। এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- গত বছরের ৭ই অক্টোবরের পর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় এ নিয়ে গত ৬ মাসে প্রায় ৩৪ হাজার জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আরও আট হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর ও স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে তাঁদের মরদেহ আটকে পড়ে আছে। অব্যাহত হামলার কারণে এসব মরদেহ উদ্ধার করাও যাচ্ছে না।

নারী-শিশুসহ বেসামরিক লোকদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না বর্বর ইসরায়েল, হামলে পড়ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জন্য সহায়তা হিসেবে আসা ত্রাণবহরের ওপরও। এক ত্রাণবহরে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিজেদের সাত কর্মী নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা ইস্যুতে গাজায় কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছে ত্রাণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে)। সম্প্রতি ত্রাণবাহী একটি বহরে বোমা হামলায় ছয় বিদেশিসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। নিহত ত্রাণকর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) পক্ষ থেকে গাজায় খাবার বিতরণ করছিলেন। এ নিয়ে গত ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ১৭৯ জন শুধু ত্রাণকর্মী নিহত হলেন। ভাবতে পারা যায় না, কী মানবেতর পরিস্থিতি এখন অতিক্রম করছে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী।

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে মুসলিম ধর্মসম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র মাস মাহে রমজান শেষ হয়েছে। পবিত্র এই মহিমান্বিত মাসেও থেমে থাকেনি নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর ইসরায়েলি হামলা। ফিলিস্তিনের গাজায় গত ছয় মাস সময় ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে কেবল আগের রেকর্ডই ভেঙে চলেছে। গাজায় যেকোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তাকে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। ত্রাণের অভাবে সেখানে গাজার শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে- তবুও সেখানে ত্রাণ যেতে দিচ্ছে না বর্বর ইসলায়েলি সৈনিকরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে- গাজার অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসলায়েল। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল গাজা ভূখণ্ডে সাহায্য প্রবেশের অভাবকে মানবসৃষ্ট বড়ো বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ বিপর্যয় থেকে কীভাবে মুক্তি মিলবে তার কোনো পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না।

ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যাকে কেন নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না- বিশ্বের অগণিত শান্তিপ্রিয় মানুষের সেটাই হলো মৌলিক প্রশ্ন। ইসরায়েলি বর্বর সৈনিকরা এখনো নির্বিচারে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বেসামরিক স্থাপনার ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। গত ৭ই অক্টোবরে শুরু হওয়া আকাশ ও স্থলপথের হামলায় এই জনপদটি এখন প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই সেখানে বেড়ে চলেছে লাশের সারি। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ৭৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত মানুষদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার শিশু এবং ৯ হাজার নারী রয়েছে। অপর দিকে গাজার বাইরে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন ইসরায়েলের হামলায় নিহত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

বিরামহীন ইসরায়েলের হামলায় ভেঙে পড়েছে গাজার প্রায় সব অবকাঠামোগত ব্যবস্থা। এ পর্যন্ত উপত্যকাটির প্রায় ৪ লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরের হাসপাতালগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই ধ্বংস করা হয়েছে। চলমান সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক হাজারের বেশি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। স্তম্ভিত হতে হয় এটা ভেবে যে- ২৩ লাখ অধ্যুষিত একটি শহরের ২০ লাখ মানুষই যদি তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় তাহলে সেই শহরের প্রকৃত অবস্থাটা কী! এখন গাজায় ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে যে ১৯ লাখই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত- তারা খাবার, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকটে ভুগছে। এরই মধ্যে না খেতে পেয়ে অনেক ফিলিস্তনি নাগরিকই মৃত্যুবরণ করছে। কোনো ত্রাণবাহী গাড়িকে গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না দখলদার হানাদাররা।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর কিছুদিন পূর্বে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক যে- প্রস্তাবটিতে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা তো নেই-ই; দ্রুত কোনো যুদ্ধবিরতিরও ইঙ্গিত নেই। শুধুমাত্র সেখানে ত্রাণ পৌঁছানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিকে ‘গাজায় কেউ আমাদের থামাতে পারবে না’ বলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আবারও হুমকি দিয়েছে। প্রশ্ন হলো- এর বিপরীতে বিশ্বনেতৃত্বের কি কোনোকিছুই করার নেই!

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্য টিম ওয়ালবার্গ। এ জন্য তিনি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাপানের ‘হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো বোমা ফেলার’ আহ্বান জানিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর জেরে জাপানের আত্মসমর্পণ ত্বরান্বিত হয়। চূড়ান্ত জয় পায় মার্কিন জোট। মিশিগানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য টিম ওয়ালবার্গ গত ২৫শে মার্চ নিজের নির্বাচনি এলাকার একটি টাউন হলে ভোটারদের সামনে দেওয়া ভাষণে এমন মন্তব্য করেন। এদের মতো লোকেরাই হচ্ছেন মার্কিন দেশের আইনপ্রণেতা। এদের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের আইন প্রণয়নের কাজটি হয়ে থাকে- এটা কি কোনোভাবে ভাবা যায়? এই ধরনের মানবতাবিরোধী আহ্বান জানিয়েও তিনি কীভাবে দেশের কংগ্রেস সদস্য হিসেবে থাকতে পারেন! এ ধরনের ঘৃণ্য মার্কিন জনপ্রতিনিধিসহ বিশ্বজুড়ে আধিপত্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষ মদদেই যে ইসরায়েলের এই বাড়-বাড়ন্ত তা অনুধাবন করতে কারুরই আর বুঝতে বাকি থাকে না।

এটা সকলেরই জানা যে- আমেরিকার প্রশাসন ও রাজনীতিবিদগণ সব সময় নিজেদের স্বার্থেই কাজ করে থাকেন। বিশ্বজুড়ে সাধারণ কোনো নিরীহ মানুষের মৌলিক ও মানবিকতার প্রতি তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বিশ্বজুড়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় আমেরিকা দিন দিন শুধু ব্যর্থতার পরিচয়ই দিচ্ছে না বরং তারা ইচ্ছে করে মানবিকতাকে ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে। অথচ এই দেশটিই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধুয়া তুলে অনেক দেশে সামরিক অভিযান চালিয়ে সে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে; তাদের রাষ্ট্রকাঠামো পর্যন্ত ভেঙে দিচ্ছে। মানবাধিকারকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে মূলত বিশে^র বহু স্থানে মানবাধিকারকেই ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। এই দেশটি তাদের স্বার্থের কোনো ব্যাঘাত ঘটলেই সেই দেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে থাকে। বিগত বছরজুড়ে বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ২০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি ও বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তাদের সম্পদ পর্যন্ত জব্দ করেছে এবং তাদের দেশ যুক্তরাষ্টসহ অনেক দেশে অবাধ যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্রুম্যান প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদান করেন। ট্রুম্যানের ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদানের পেছনে কিছুটা ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবদান ছিল। ব্যবসায় ট্রুম্যানের সাবেক সহযোগী এডওয়ার্ড জ্যাকবসন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ভিত্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে কৌশলগত কার্যকারণও বিবেচনায় আনা হয়েছিল। বিষয়টি ঘটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার ঠিক পরেই। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বিদ্যমান স্নায়ুযুদ্ধ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য এবং সেখানকার কৌশলগত জলপথ, সুয়েজ খালসহ অন্যান্য পথ পরাশক্তিগুলোর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্বল হয়ে পড়া ইউরোপীয় শক্তির কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের প্রধানতম পশ্চিমা প্রতিনিধি হয়ে উঠছিল। কিন্তু তখনো পর্যন্ত ইসরায়েলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের এতটা অন্ধ সমর্থন ছিল না। এরপরে মিসর, সিরিয়া এবং জর্দানের দুর্বল নেতৃত্বে ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবশিষ্ট মুক্তাঞ্চলও দখল করে নেয়। একই সাথে তারা সিরিয়া এবং মিসরের কিছু অংশও দখল করে। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সামরিক আধিপত্যকে দ্ব্যর্থহীনভাবে সমর্থন প্রদান করতে শুরু করে।

বলার অপেক্ষা রাখে না- মূলত আরব রাষ্ট্রগুলোর বৈরী আচরণ প্রতিহত করতেই যুক্তরাষ্ট্র এই পথ বেছে নেয়। আর মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিরুদ্ধ মনোভাবাপন্ন মানসিকতা এই সমর্থনকে আরও এক ধাপ উসকে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে এরপর বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্রসহ অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে ইসরায়েল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের মার্কিন সরকারগুলো সে বরাদ্দ আরও বাড়ানো ছাড়া কমায়নি কখনো। ইসরায়েলের কোনো সাহায্য প্রয়োজন না হলেও তাদের সব সময় সাহায্য করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের অবাধ সাহায্যের আশকারা পেয়েই এবারও নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল গত ছয় মাস ধরে। এই সময়ে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার পর থেকে গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠাতে পারেনি জাতিসংঘসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলো। পানি, খাদ্য, ঔষধের মতো জীবন রক্ষাকারী কোনো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য গাজায় ঢুকতে না দেওয়ার ফলে যে মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি শুরু হয়েছে সেখানে- তা এক কথায় বর্ণনাতীত। গাজাবাসীকে বাঁচাতে অবিলম্বে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করে এই বর্বর যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে অবিলম্বে। বিশ্ববিবেক এই নৃশংসতার বিপরীতে নিশ্চুপভাবে বসে থাকবে- এটা বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষ আর দেখতে চায় না। আর বিশ্বের অপরাপর বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক সিদ্ধান্তগুলোর বিপরীতে সোচ্চার হতে হবে এখনই।

আলী হাসান: সাংবাদিক, কলাম লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :