এমপি শাহরিয়ার আলমের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: মেয়র লিটন

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১৩| আপডেট : ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১৮
অ- অ+

বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যা নিয়ে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের দেওয়া বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঈর্ষাপরায়ণমূলক উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় নগর ভবনে মেয়রদপ্তর কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন রাসিক মেয়র। সেখানে তিনি তাকে নিয়ে দেওয়া শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘কিছুদিন আগে বাঘায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুতর আহত হন। তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং চিকিৎসা নিয়ে তার অবস্থার উন্নতি হয়। হঠাৎ বুধবার সকালে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। বিকাল চারটা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে তিনি মারা যান।’

মেয়র বলেন, ‘মরহুম বাবুল সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা ছিলেন। আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন। আমি আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই তাকে পাশে পেয়েছি। বাবুল যখন ছাত্রনেতা, তখন থেকেই তিনি নিবেদিত প্রাণ আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করার মতো নিন্দনীয়-নৃশংস ঘটনার সঙ্গে আমার কোনোভাবে জড়িত থাকার কোনো কারণ নেই, সুযোগ নেই, যুক্তিও নেই।’

লিটন বলেন, ‘মরহুমের জানাযায় আমাকে দায়ী করে, সরাসরি আমার নাম ধরে, আমার দলীয় পদ উল্লেখ করে, আমার পাশাপাশি আমাদের আরেকজন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বাঘা-চারঘাটের বর্তমান এমপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঈর্ষাপরায়ণভাবে এ রকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। জানাযা নামাজের মতো একটি পবিত্র কাজ, যেখানে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়, সেখানে এভাবে ‘মামলা করা হবে, মোবাইল কললিস্ট চেক করা হোক, মামলার আসামি করা হবে- এই সমস্ত কথা তার কাছ থেকে আমি আশাই করিনি।’

‘তিনি (শাহরিয়ার আলম) কী উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেন বলেছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। যারা রাজনীতি সচেতন ও বিবেকসম্পন্ন মানুষ, তারা নিশ্চয়ই এ রকম কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করবেন না। করার কোনো কারণ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একজন দলীয় নেতাকে হারালাম। এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও কষ্টকর। বাবুল হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আমিও চাই। আমার বয়স এখন ষাটের ওপরে। আমার রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের ঘটনায় মদদ দেওয়ার ইতিহাস নেই। মনে হচ্ছে যেন লাশটি কারও দরকার ছিল, যেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করা যায় এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। এ রকম একটা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকারী একটি গোষ্ঠী ছিল, এখনো আছে বলে আমি মনে করি, অনেকেও তাই মনে করেন। এই লাইনেও বিষয়গুলো তদন্ত হওয়া দরকার।’

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পর রাজশাহীতে যারা নতুন সংসদ সদস্য হলেন, তারা নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে গিয়ে ভালো-মন্দ অনেক কিছু করেছেন। আমরা যারা বংশগতভাবে, জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ করি, ছোটবেলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, মেনেছি, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মেনে রাজনীতি করি, আমরা হচ্ছি আদি ও অকৃত্রিম। যারা পরে নানাভাবে এসেছেন, তারা কী উদ্দেশ্যে এসেছেন, জনগণ ভালোভাবে বলতে পারবেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও যারা তাদের চিনেন জানেন, এলাকাবাসী তারা ভালো বলতে পারবেন। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমরা যারা আওয়ামী লীগের রক্ত নিয়ে বড় হয়েছি, তাদেরকেই এখন হেনস্থা করার অপচেষ্টা করছেন নতুনরা।’

রাসিক মেয়র আরও বলেন, ‘বাবুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়েছিলাম। তার সন্তানের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছি। আমি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকবো, ইনশাআল্লাহ।’

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বাবুলের জানাজা। সেখানে উপস্থিত হয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর পেছনে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনসহ তিন নেতার মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন শাহরিয়ার আলম এমপি।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সিগারেটের প্যাকেটের দাম সর্বনিম্ন ৯০ টাকা করার দাবি ডর্‌প যুব ফোরামের
ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে নগরভবনে তালা
জামালপুরের মেলান্দহে সুইপার কলোনিতে আগুন, দগ্ধ হয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু 
নোয়াখালীতে বন্দুকসহ মাদক কারবারি আটক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা