সরকারি চাকুরেদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিলের নির্দেশ

কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত একটি রিটের রুল শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ আদেশের আগে হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি উন্নয়ন ও সুশাসনের অন্তরায়, তাই যেকোনো মূল্যে এটি থামাতেই হবে। শুধু সরকার নয়, জনগণকেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এর বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।’
পুলিশ ও এনবিআরের একের পর এক কর্মকর্তার বিত্ত-বৈভবের খবর ফাঁস হওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রতি বছর সরকারি চাকরিজীবীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার এ রিট আবেদন করেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।
আদালতে রিটকারী আইনজীবী নিজেই শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি চাকুরেদের সম্পদের হিসাব আইনে উল্লেখিত যথাযথ নিয়মে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছিল।
হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আরও বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে হারে দুর্নীতির খবর দেখা যাচ্ছে, তা বিস্ময়কর। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নের অন্তরায়। যেকোনো উপায়ে এটি থামাতেই হবে। শুধু সরকার নয়, জনগণকে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।’
১৯৭৯ সাল থেকে সরকারি চাকুরেদের সম্পদের হিসাব পাঁচ বছর পরপর জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে কখনোই এর কার্যকারিতা সেভাবে দেখা যায়নি।
২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি চাকুরেদের তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকারও সরকারি চাকুরেদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলেছিল। তবে তাতেও খুব একটা সাড়া মেলেনি। আবার সরকারি কর্মচারীদের আয়কর বিবরণীতে তাদের সম্পদের তথ্য থাকার বিষয়টিও বলা হয়। তবে এনবিআরে জমা দেওয়া বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদের তথ্য না দেখানো এবং বেনামে সম্পদ লুকিয়ে রাখার অভিযোগও আছে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল—আইএমএফ বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি বছর সম্পদের হিসাব নেওয়ার তাগিদ দেয়।
(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/ডিএম)

মন্তব্য করুন