সরকারকে নিজের ঘরের দিকেও তাকাতে হবে

আলী রেজা
| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:১০ | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলন আপিল বিভাগের একটি যুগান্তকারী রায়ের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। কোটার শতকরা হার এমন পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে যে, এ ব্যাপারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজ সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাতেই পারে। এ আন্দোলনে হতাহত ছাত্রদের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন ও যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদেরকে আইনি সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে সরকার। সরকারের এ সদিচ্ছার প্রতিও সাধুবাদ জানানো যায়। কিন্তু এ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ও পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে জনমনে যে অভিযোগ উঠেছে সেটাও নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কোটা বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এত বেশি নাশকতার ঘটনা কীভাবে ঘটে গেল সেটা একটি বড়ো প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আন্দোলনকারী ছাত্ররা হতাহত হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হতাহত হয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। আর এ সবই করা হয়েছে অতি অল্প সময়ে।

পেশাদার দুস্কৃতিকারীদের সুপরিকল্পিত প্রক্রিয়া ছাড়া এ ধ্বংসযজ্ঞ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। সরকার তার সর্বশেষ শক্তি সেনাবাহিনী মোতায়েন করে, কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু জানমালের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আর কখনোই পূরণ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর চালিয়ে, অগ্নিসংযোগ করে যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটানো হয়েছে তা দেশের অর্থনীতিকেও থমকে দিয়েছে। নির্দিষ্ট একটি দাবিতে সংগঠিত নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনে এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ছাত্র আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী সরকারবিরোধী একটি গোষ্ঠী এসব নাশকতার জন্য দায়ী। জামাত-শিবির ও বিএনপির প্রতিই সরকার অঙ্গুলি নির্দেশ করছে। সরকারের এ অভিযোগ অমূলক নাও হতে পারে। কারণ সরকারের প্রতি চাপপ্রয়োগকারী যেকোনো আন্দোলনে সরকারবিরোধী পক্ষ যুক্ত হবে- এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্রগণ বলেছেন, তারা কোনো নাশকতার সঙ্গে যুক্ত নন এবং কোনো নাশকতার দায় তারা নিবেন না। এ কথায় যুক্তি আছে। অনুপ্রবেশকারী গোষ্ঠী নাশকতা করলে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজ তার দায় কেন নিবেন? অবশ্য সরকারও ছাত্রসমাজকে দায়ী করছেন না। আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী দুর্বৃত্তদেরকেই সরকারের পক্ষ থেকে দায়ী করা হচ্ছে। কারা এই দুর্বৃত্ত? উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদেরকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ এখন সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।

যেভাবে নাশকতা করা হয়েছে নিঃসন্দেহে তা একটি সংঘবদ্ধ জঙ্গিতৎপরতা। পূর্বেও দেশে এ ধরনের নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু এবারের নাশকতাকে একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়। জেলখানা ভেঙে দাগী আসামীদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করা ও অস্ত্র লুণ্ঠন করা কোনোভাবেই ছাত্র আন্দোলনের অংশ হতে পারে না। এ ঘটনাই প্রমাণ করে যে এটি একটি সরকারবিরোধী তৎপরতা। তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে সরকার পতনের আন্দোলন করে আসছে তাদের সঙ্গে নাশকতাকারী দুর্বৃত্তদের সম্পর্কের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেনা মোতায়েন ও কারফিউ জারির পর নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তথ্য-উপাত্ত ও ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে ক্রমশ একটি বিষয় পরিষ্কার হচ্ছে যে, ছাত্রদের কোটা সংষ্কার আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারীরাই সারা দেশে এ তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো কারা এ অনুপ্রবেশকারী? দেশব্যাপী পরিচালিত চিরুনি অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের বেশিরভাগ রাজনৈতিক পরিচয়ে জামাত-শিবির ও বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থক। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, তারা মূলত দুস্কৃতিকারী দুর্বৃত্ত। এত অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে এ ধরনের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। এ ধরনের সংঘবদ্ধ জঙ্গিতৎপরতা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদার দুর্বৃত্তদের দ্বারাই সম্ভব। কেন্দ্রীয় ডেটা সেন্টারে অগ্নিসংযোগ, সেতু ভবন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যববস্থাপনা ভবন, টোলপ্লাজা এবং মেট্টোরেলে অগ্নিসংযোগ, টেলিভিশন ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এসব নাশকতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি নয়। সাধারণ ছাত্ররা তাদের দাবির পক্ষে মিছিল করেছে, রাস্তা অবরোধ করেছে, ক্লাস বর্জন করেছে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমেই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। পুলিশের গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হলে আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজ ফুঁসে ওঠে। আইনবহির্ভূতভাবে সাইদকে গুলি করা হলে গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যকেও বিচারের আওতায় আনা জরুরি। বিভিন্ন সূত্রে যতদূর জানা গেছে তাতে নিহত আবু সাঈদ কোনো নাশকতার ঘটনা ঘটায়নি। কিন্তু পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর নিয়মতান্ত্রিক কোটা সংস্কার আন্দোলন সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই সুযোগে ছাত্র আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটে দুস্কৃতিকারী দুর্বৃত্তদের।

সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বিরোধীপক্ষ সরকার পতনের আন্দোলন করে আসছিল। জামাত-শিবির ও বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে চাপসৃষ্টিকারী যেকোনো তৎপরতায় সমর্থন দিয়ে আসছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছে। এসব বিবেচনায় জামাত-শিবির-বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো সাম্প্রতিক নাশকতায় দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। তাই বলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিরোধীপক্ষকে ঘায়েল করার অভিপ্রায় নিয়ে ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা ঠিক হবে না। ক্ষমতাসীন দলেও দুস্কৃতিকারী দুর্বৃত্ত আছে। তাদের নির্যাতন-নিপীড়ন ও দুর্নীতিতে সাধারণ মানুষ এখন দিশেহারা। ক্ষমতাসীন দলে থাকা এসব দুর্বৃত্তদেরও বিচার করতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের যে কোণঠাসা অবস্থা লক্ষ করা গেছে তাতে একটি কথা পরিষ্কার যে, সাধারণ ছাত্ররা এখন ছাত্রলীগকে আর সমীহ বা পছন্দ করছে না।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে, ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দেশে দুর্নীতির ডালপালা বিস্তৃত হয়েছে। সরকার যতটা দমন করে তার চেয়ে বেশি গজিয়ে ওঠে। ফলে সরকারকে নিজের ঘরের দিকেও তাকাতে হবে। সম্প্রতি সরকারের কতিপয় শীর্ষ কর্মকর্তার সীমাহীন দুর্র্নীতির তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। অধস্তন কর্মচারীদের দুর্নীতিও আকাশছোঁয়া। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টিও সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করে তুলেছে। এই বাস্তবতায় সাধারণ ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন বিষয়ে সাধারণ মানুষকে নীরব থাকতে দেখা গেছে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সাধারণ মানুষের এ নীরবতা সরকারের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। সব সময়ে সবকিছু পুলিশ দিয়ে দমন করা যায় না। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ মানুষের মৌন সমর্থনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে শুরুতেই সমাধানের পথে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা এতটা ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারতো বলে মনে হয় না।

গত রবিবার হাইকোর্ট ৯৩% মেধাবী কোটা, ৫% মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কোটা, ১% আদিবাসী কোটা এবং ১% প্রতিবন্ধী কোটা ঘোষণা করে রায় দিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ সকলের মনেই স্বস্তি ফিরে আসে। আদালতের রায়ের আগেই শিক্ষার্থীদের অপ্রতিহত আন্দোলন আঁচ করে আন্দোলনের সাথে সরকার নীতিগত ঐক্যের কথা জানায়। এছাড়া হাইকোর্টে কোটা-সংস্কার বিষয়ক ইস্যুর শুনানিও ৭ই আগস্টের পরিবর্তে ২১শে জুলাই এগিয়ে আনা হয়। এসবই সরকারপক্ষের নমনীয়তার স্বাক্ষর সন্দেহ নেই। কিন্তু সরকারের এই এতসব সমঝোতামূলক নমনীয়তা প্রকাশে এত বিলম্ব হলো কেন? সময়মতো সরকারের বোধোদয় হলে দুইশতাধিক মানুষের প্রাণহানিসহ সারা দেশে এতটা ধ্বংসযজ্ঞ ঘটনানোর সুযোগ কি দুর্বৃত্তরা কোনোভাবেই পেতো?

বর্তমান সময়ে দেশে পুলিশ বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেক সময়ে পুলিশের অতি উৎসাহী আচরণে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে দুর্বৃত্তরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশ বাহিনী। পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ সংখ্যক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য নিহত হয়েছেন। সরকার তার সক্ষমতা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। তাই বলে সন্তোষ প্রকাশ করা যাবে না। সরকারের সবচেয়ে বড়ো দায়িত্ব হলো দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করা।

সরকারপ্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গত বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী। নিজেই পুরো স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখেন। একপর্যায়ে স্টেশনের ধ্বংসলীলা দেখে কেঁদেও ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনে বারবার নিজের অশ্রু সংবরণের চেষ্টা করতেও তাকে দেখা যায়। এ সময় ধ্বংসযজ্ঞকারীদের রুখে দিতে জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। দেশের নাগরিকদের সম্পদ ধ্বংসকারী এসব দুর্বৃত্তকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এও বলেন, সরকারের উন্নয়ন যারা ধ্বংস করেছে তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতেই হবে। এসব তাণ্ডব যারা করেছে, তাদের বিচার দেশবাসীকে করতে হবে।

নাশকতাকারীদের সর্বশক্তি দিয়ে চিহ্নিত করে আইনের মুখোমুখি করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দুর্বৃত্তরা কোনোভাবে পার পেয়ে গেলে তারা আবার সংঘবদ্ধ হবে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। দেশবাসী আর কোনো রক্তাক্ত সময়ের মুখোমুখি হতে চায় না। তিরিশ লক্ষ শহিদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এদেশে আর কোনো রক্তপাতের ঘটনা দেখতে চায় না। দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করার যে অভিযান চলছে তার সফল সমাপ্তি দেখতে চায়। তবে দুর্বৃত্ত দমনের নামে বিরোধীপক্ষকে নির্মূল করার অপরাজনীতিও দেখতে চায় না দেশের মানুষ। সরকারের পুলিশ বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই সরকারকে নিজের ঘরের দিকেও তাকাতে হবে।

আলী রেজা: কলাম লেখক, কলেজ শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :