নিবন্ধন পাচ্ছে এবি পার্টি, ইসিকে নির্দেশ হাইকোর্টের

জামায়াতে ইসলামীর ‘সংস্কারপন্থি’ একদল নেতাকর্মীকে নিয়ে ২০২০ সালে গড়ে ওঠা আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে।
দলটিকে নিবন্ধন দিতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এবি পার্টির একটি রিটের শুনানি শেষে সোমবার এ আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ সত্ত্বেও দলটিকে নিবন্ধন না দেওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলেছেন উচ্চ আদালত।
রায় ঘোষণার পর মামলার আইনজীবী ও এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ আদালত চত্বরে তাৎক্ষণিক প্রেস ব্রিফিং করেন।
এতে মামলার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আদালত আজ যে রায় দিয়েছেন তাতে এবি পার্টির ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন যে হঠকারী এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী কাজ করেছেন তা আজ স্পষ্ট হয়েছে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, পদে পদে বাধা দিয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদের নিবন্ধন বঞ্চিত করেছিল। এবি পার্টির প্রতি দলান্ধ নির্বাচন কমিশন যে অবিচার করেছে জনগণ তার বিচার করবে। মামলার রায় প্রদানকালে আদালত চত্ত্বরে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন, পরে তারা শুভেচ্ছা মিছিল করে দলীয় কার্যালয়ে আসেন।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯০ খ(১)(ক)(ই) এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৬ উপ-বিধি (ঞ)(ই) অনুসারে গত ১৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে এবি পার্টি নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে।
আবেদনকারী ৯৩টি রাজনৈতিক দল হতে প্রথম পর্যায়ে ১২টি এবং অধিকতর যাচাই বাছাইয়ের পর ৪টি রাজনৈতিক দলকে ইসি চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে। সেই ৪টি দলের ১০ শতাংশ জেলা-উপজেলায় আবার পুনঃতদন্ত করা হয়। প্রতিটি স্তরের যাচাই বাছাইয়ে আইন ও নিয়মানুযায়ী এবি পার্টি যোগ্য বিবেচনায় শীর্ষস্থানে ছিল। কিন্তু সর্বশেষে এসে ইসি দুটি ‘ভূঁইফোড়’ দলকে নিবন্ধন দিলেও এবি পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
এই প্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ আগস্ট এবি পার্টির পক্ষ থেকে রিট আবেদন করা হয়। সব শর্ত পুরণ করা সত্ত্বেও এবি পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সেদিনই রুল জারি করেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।
একইসঙ্গে এবি পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না, রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
দীর্ঘ এক বছর নানা আইনি প্রক্রিয়া ও যুক্তিতর্ক শেষে গত ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার মামলার চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আজ মামলাটির চূড়ান্ত রায় দেয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/ইএস/ডিএম)

মন্তব্য করুন