ঢামেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
জরুরি বিভাগে চিকিৎসাহীন বসে আছেন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী
গলায় ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে মাদারীপুর থেকে ভোর রাতে রওনা দিয়ে সকালে পিজি হাসপাতালে গিয়েছিলেন শিল্পী খাতুন। সেখান থেকে কর্তব্যরত ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে গলায় অপারেশন করার পরামর্শ দেন। তা না হলে তিনি যেকোনো মুহূর্তে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারেন বলে জানান চিকিৎসক। এরপর সকাল প্রায় ৯টার দিকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আসেন শিল্পী। কিন্তু বাবাকে ভর্তি করাতে না পেরে হতাশ হয়ে বসে আছেন জরুরি বিভাগে।”
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধর এবং জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করার প্রতিবাদে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শতশত রোগী।
রবিবার দুপুর ১টার দিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
সেখানে চিকিৎসার জন্য ভিড় করেছেন শতশত রোগী। কিন্তু কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।”
জরুরি বিভাগে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিল্পী খাতুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, “সাড়ে আটটা-নয়টার দিকে এসে দেখি জরুরি বিভাগে কোনো ডাক্তার নেই। কোনো ভর্তি নিচ্ছে না। যদি বাবাকে ভর্তি করতে না পারি তাহলে অপারেশন করাতে পারব না। আর যদি অপারেশন করাতে না পারি তাহলে আমার বাবাকে বাঁচাতে পারব না।”
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “আমরা তো সাধারণ মানুষ। আমাদের তো কোনো দোষ নেই তাহলে আমরা কেন চিকিৎসা পাব না।”
ঝিনাইদহ থেকে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ঢামেকে এসেছেন মরিয়ম। কিন্তু এখনো ভর্তি করাতে পারেননি তিনি। স্বামীকে নিয়ে ঘুরছেন এদিক সেদিক। অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এভাবে হাসপাতালে যদি চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকে তাহলে আমরা গরিব মানুষ কোথায় যাব। আমাদের তো অত টাকাও নেই যে অন্য হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাব।”
উল্লেখ্য, ঢামেকে রবিবার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। এর আগে শনিবার নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধর এবং জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/০১সেপ্টেম্বর/এমআই/এফএ)