মেঘনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার সাতানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আসাদ উল্লাহর বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফি’র নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে শ্রেণি ভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত 'ফি' আদায় করেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক অভিভাবক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
জানা গেছে, চন্দনপুর ইউনিয়নের সাতানি এলাকায় কয়েক শতাংশ জায়গার ওপর ১৯৭৩ সালে স্থাপিত এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৫৫ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ৩৭ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩৮, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩৩, চতুর্থ শ্রেণিতে ৩০ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ১৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা থেকে শুরু করে বেতন ও পরীক্ষার ‘ফি' সরকার বহন করে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়। এছাড়া মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখায়ৈ উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। অথচ প্রধান শিক্ষক মো. আসাদ উল্লাহ একক সিদ্ধান্তে এই টাকা আদায় করে থাকেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ৬০ টাকা হারে পরীক্ষার ‘ফি' দিতে বাধ্য হয়।
এদিকে ওই এলাকার সমাজসেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “এই প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার ‘ফি' আদায় করার বিষয়টি আমিসহ এলাকার লোকজন যখন জানতে পেরেছে, তখন তিনি সোমবার সকালে সব শিক্ষার্থীর টাকা ফেরত দিয়ে দেন। এমনকি দফতরি মোশাররফ হোসেনকে অফিসের কাজ শেষে তার বাড়ির কাজও করাতে দেখা যায়। তবে এই অনিয়মের বিষয়টি ইউএনওসহ শিক্ষা অফিসারকে ফোনের মাধ্যমে অবগত করেছেন বলে জানান তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মো. আসাদ উল্লাহ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি কোনো পরীক্ষার ‘ফি' বাবদ টাকা আদায় করেননি। তার আশপাশের কিছু ঈর্ষান্বিত ব্যক্তি তাকে বিপদে ফেলতে এসব বলছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গাজী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ে আলাদা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া আছে। কোনোক্রমেই পরীক্ষার ‘ফি' শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা যাবে না। যদি এমন অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ মিলে তাহলে তার বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেনু দাস বলেন, “আমি শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি দেখার জন্য বলব। অতিরিক্ত ‘ফি' আদায় বা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এফএ)