ছাত্র পরিচয়ে ট্রেনে একী করছেন তারা
চলন্ত ট্রেনে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলছেন ছাত্র পরিচয়ে তরুণেরা। কেউ টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন। কেউ নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া ট্রেন থামাতে বাধ্য করছেন। কেউবা বন্ধুকে তুলে আনতে ট্রেনকে পেছনে নিয়ে ফেরত নিতে আবদার করছেন। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে এসব ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে রেল কর্তারা।
‘১৫ সেপ্টেম্বর রাত। ময়মনসিংহ হয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন। চলন্ত ট্রেনে টিকিট চেক করছিলেন দায়িত্বরত টিটি। এক পর্যায়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা কয়েকজন যাত্রী পাওয়া যায়। এ সময় টিকিট নাই কেন জানতে চান তিনি। এ নিয়ে ওই যাত্রীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের ছাত্র পরিচয় দেয়। তখন টিটি আনিসুল ইসলাম তাদেরকে বলেন, আপনারা ছাত্র ভালো কথা, কিন্তু আপনাদের টিকিট কই? টিকিট করেননি এটাতো অপরাধ । আপনারা টাকা দিয়ে টিকিট করে তারপর আপনাদের গন্তব্য নেমে জান। পরে রানিং টিকিট করে তারা কুমিল্লা স্টেশনে নেমে পড়েন। তবে নেমে যাওয়ার সময় দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা। ঠিক এর পরের দিন সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন কুমিল্লা পৌঁছালে ২৫/৩০ জন তরুণ যাত্রীবাহী ট্রেনটি আটকিয়ে দেন এবং স্টেশনের সিগন্যাল রুমে থেকে সবাইকে বের করে দেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক ঘটনার কথা (বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তার) জানালে সঙ্গে সঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে ফোন করে বিস্তারিত জানান। বিষয়টি জানার পরপরই তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে রাত ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনেও একই ঘটনা ঘটে। তরুণদের বিশৃঙ্খলার কারণে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে ট্রেন থামাতে বাধ্য হন ট্রেনের চালক। অবশ্য ট্রেনে যাত্রী হিসেবে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, টিকিট না কেটেই ট্রেনে করে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে আসতে চেয়েছিলেন ২০-২৫ জন তরুণ। এতে বাধা দেন রেল কর্মীরা। এ নিয়ে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। একপর্যায়ে রেলকর্মীদের বাধা উপেক্ষা করে তিনজন ছাড়া অন্য সবাই ট্রেনে উঠে পড়েন। এ অবস্থায় ট্রেন ছেড়ে দিলে আবার ট্রেনের ভেতরে হট্টগোল শুরু করেন তরুণেরা। ট্রেন পেছন দিকে এনে অন্য তিনজনকে নেওয়ার আবদারও করেন তারা। তাদের কথা না শুনলে ট্রেনের ভেতরে দায়িত্বরত রেলকর্মীদের লাঞ্ছিত করা হয়।
পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে প্রধান পরিবহণ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে যেকোনো সময় রেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতি সমাধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছে রেলওয়ের এ কর্মকর্তা।(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/পিএস)