পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থি শিক্ষাবিদ রাখার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:২৬
অ- অ+

পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থি শিক্ষাবিদ রাখার দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মুফতি সাইফুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঠ্যপুস্তকের অনেক কনটেন্টই ইসলামের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক ছিল। ইতিহাসে ছিল অখণ্ড ভারতের বয়ান। তাছাড়া মুসলিম শাসন আমলকে সচেতনভাবে বিকৃত ও নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টাও পরিলক্ষিত হয়। শিল্প ও সংস্কৃতি বইটা বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে, মুসলিম সন্তানদের নাচগানে বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস এবং সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের শরিফার গল্প তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই গল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকৃত পশ্চিমা এলজিবিটি মতাদর্শের প্রবেশ ঘটে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে সেটা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটি জনসম্মুখে প্রকাশ হওয়ার পর থেকে আবারও বিতর্ক শুরু হয়। কমিটির কয়েকজন সদস্য এলজিবিটি মতাদর্শের সমর্থক এবং গভীর ইসলামবিদ্বেষ লালন করেন। আমরা দাবি জানাই, এই বাস্তবতায় ধর্ম উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষাবিদদের উপযুক্ত টিম কর্তৃক পাঠ্যপুস্তকগুলো রিভিউ করা হোক। একই সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করে সংশোধন এবং প্রয়োজনে বাদ দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানা গেছে, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ শেষের দিকে এবং মধ্য অক্টোবরে বই প্রেসে যাবার পরিকল্পনা আছে। সংগত কারণেই বইগুলো রিভিউ করা জরুরি। আপত্তিকর আলোচনাসহ বইগুলো বাজারে আসলে তীব্র আন্দোলন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যেটা সরকারের স্থিতিশীল হওয়ার পথে প্রতিবন্ধক হতে পারে। তাছাড়া বই ছাপানোর পর বাতিল করতে হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্ছাও যাবে। ফলে, বইগুলো আগেই রিভিউ করা হলে অনেক জটিলতা এড়ানো যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শব্দের মারপ্যাঁচে এলজিবিটি মতাদর্শের কোনো কন্টেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ইসলাম শিক্ষা বইয়ের কাজ করেছেন আবু সাঈদ খান নামক একজন ঘোষিত হাদিস অস্বীকারকারী। এ নিয়েও গণপরিসরে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।’

বিদ্যমান বাস্তবতায় সংবাদ সম্মেলন থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো—

পাঠ্যপুস্তক চূড়ান্ত এবং ছাপানোর আগে তা অবশ্যই একদল শিক্ষাবিদ দ্বারা পর্যালোচনা করাতে হবে। যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন, প্রয়োজনে বাদ দেবেন। এই টিমে অবশ্যই আলিমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো ভিনদেশি মতাদর্শ প্রচার করা যাবে না, যা দেশের সাংস্কৃতিক, নৈতিক এবং ঈমানী মূল্যবোধের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ। বিশেষ করে এলজিবিটি এবং জেন্ডার আইডিওলজিসহ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কনটেন্ট বইতে থাকা যাবে না।

পাঠ্যপুস্তক থেকে অখণ্ড ভারতের বয়ান বাদ দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে হবে। ইতিহাস পাঠে অবশ্যই মুসলিম শাসনের সোনালি ইতিহাস ও অবদানের আলোচনা নিশ্চিত করতে হবে, যা পূর্বে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে এই সমন্বয় কমিটি এবং সংশোধন ও পরিমার্জন টিম গঠিত হলো ও সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হল এবং কেন সেখানে কোনো শিক্ষাবিদ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে।

গণমানুষের চাহিদাকে আমলে নিয়ে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে, সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ডা. মেহেদী হাসান, প্রফেসর মুখতার আহমেদ, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, লুৎফর রহমান ফরায়েজি, সাইমুম সাদী, রেজাউল করিম আবরার ও শরিফ আবু হায়াত অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২অক্টোবর/এমআই/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রেললাইনে ভিডিও করতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের মর্মান্তিক মৃত্যু
‘সাময়িকভাবে’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার
সিরাজগঞ্জে নেশার টাকা না দেওয়ায় ছেলের মারধরে প্রাণ গেল বাবার, মা আহত
আফতাবনগরে পশুর হাট না বসানোর দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা