ফরিদপুরের চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার বালুখেকো ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জেল
ফরিদপুরের আলোচিত বালু-মাটি দস্যু খ্যাত ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকালে ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মোফাজ্জেল ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
গ্রেপ্তার হওয়া মোফাজ্জেলের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অপব্যহার করে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় তিনি বালু ও ভূমি দস্যু হিসেবে পরিচিত। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই মোফাজ্জেল ও তার সহযোগিরা পদ্মা নদীর তীর থেকে দেদারসে বালু মাটি তুলেছেন। যেকে কারণে ঝুঁকিতে পড়ে যায় ফরিদপুর শহর রক্ষাবাঁধ।
ফরিদপুর শহর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৭৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বাঁধের ওপর দিনরাত বালু ও মাটিবাহী ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যান চালায় মোফাজ্জেল গং। শহরতলীর সিঅ্যান্ডবি ঘাট, ধলার মোড়, মদনখালী, গদাধর ডাঙ্গী, ভাঙা সাইনবোর্ড এলাকাসহ পদ্মাপাড়ের দুই ইউনিয়ন– নর্থ চ্যানেল, ডিক্রিরচরসহ বেশ কিছু এলাকায় সংঘবদ্ধ এই প্রভাবশালী চক্র দেদারছে নদীর বালু উত্তোলন ও ফসলি জমির মাটি কেটে সাবাড় করে। প্রশাসনের নাকের ডগায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। এতে করে এসব এলাকার ঘরবাড়ি এমনকি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
সম্প্রতি ফরিদপুর পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের মহারাজপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত রশিদ মোল্লার পুত্র ইসলাম মোল্লা বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মোফাজ্জেলের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন।
ফরিদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, অভিযুক্ত মোফাজ্জেলকে সোমবার বিকালে শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, আমরা ক্ষমতার অপব্যবহারকারী সকল অপরাধীদেরকেই আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযান পরিচালনা করছি। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ মোফাজ্জেলকে গ্রেপ্তার করেছে।
এই ভূমি দস্যু ও চাঁদাবাজ মোফাজ্জেল ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৯ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় ‘১৭৬ কোটি টাকার শহর রক্ষাবাঁধ বাঁচবে তো’ শীর্ষক এই শিরোনামে গুরুত্বের সাথে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে মোফাজ্জেলের বালু তোলার কারণ শহর রক্ষাবাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ হওয়ার বাস্তব চিত্র উঠে আসে।
(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/এসআইএস)