মোদী মমতার আশ্চর্য মিল!

নরেন্দ্র মোদী পশ্চিম বললে মমতা ব্যানার্জি পূর্ব বলতেই পছন্দ করেন। মোদী দক্ষিণে গেলে মমতা যান উত্তরে। ভারতের রাজনীতিতে গত এক দশকেরও বেশি মময় ধরে এটাই যেন ট্রেন্ড। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে স্বাভাবিক সৌজন্যবোধও অনেকক্ষেত্রে উধাও। মোদী- মমতার মধ্যে বলতে গেলে কোনও মিলই নেই। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ই উত্তপ্ত হয় ভারতের রাজনীতি। কিন্তু আচমকাই মোদী-মমতাকে মিলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক পট পরিবর্তন।
পতনের পর শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়াই যেন দুজনকে একটি বিষয়ে মানসিকভাবে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। ভারত শেখ হাসিনাকে প্রথমে ঘোষণা দিয়েই আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের যেসব কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপি বৈধ পথের বাইরে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের বিষয়েও ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলো যথেষ্ট নমনীয়।
ঢাকা টাইমস বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত খবর পেয়েছে, আওয়ামী লীগের এক ঝাঁক নেতা, সাবেক এমপি, আমলা-পুলিশ কর্মকর্তা এখন ভারতের দিল্লি ও কলকাতা শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল, অসীম কুমার উকিল, অপু উকিল কিংবা পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামকে তো প্রকাশ্যেই দেখা গেছে রেস্টুরেন্টে, দোকানে কেনাকাটা করতে। এরা কেউই বৈধভাবে বাংলাদেশের স্থল, নৌ ও আকাশসীমা পার হননি। তাহলে প্রশ্ন, এসব হেভিওয়েট দেশ ছাড়লেন কীভাবে? এটা সবাই জানেন, বোঝেন ও বিশ্বাস করেন অবৈধভাবেই ভারতে অনুপ্রবেশ করেছেন বেশকিছু আওয়ামী লীগ নেতা এবং অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা।
অন্য সময়গুলোতে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে মোদী সরকার খুবই সরব থাকেন। মমতার পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে থাকে উচ্চকণ্ঠ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মোদী-মমতা এখন নীরব। প্রতিবেশী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবৈধ ভারতবাস নিয়ে একাধিক মিডিয়ায় খবর প্রচার হলেও মোদী-মমতা সরকার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের প্রকাশ্য কোনও ঘোষণা দেয়নি।
যে অমিত শাহ কথায় কথায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে খোঁচা দেন সেই অমিত শাহও স্পিকটি নট। ঢাকা টাইমসের সূত্রগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের সল্টলেক আর নিউটাউনেই অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা ও অনুগত কর্মকর্তাদের বসবাস। আর যৌথভাবে ভারতের কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের দেখভালের দায়িত্বে। ভারতে বসেই পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ হচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন বৈধভাবে অতিক্রম করতে না পারাদের মোদী-মমতা জামাই আদরে কেন রেখেছেন? অভিবাসন আইনকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ব্যাপারে কুটনৈতিক তৎপরতা বাড়াবে বলে এই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/এআরডি)

মন্তব্য করুন