বগুড়ায় প্রেমিকার মামলায় প্রেমিক কারাগারে

প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে এলাকারবাসীর কাছে ধরা পড়েন প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন। দুজনকে তারা বিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেন। কিন্তু প্রেমিকা রাজি থাকলেও প্রেমিক ও তার পরিবারের বিয়েতে দ্বিমত। এ নিয়ে চলে রাতভর আলোচনা।
শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সোমবার ওই প্রেমিকা মামলা করলে পুলিশ প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এর আগে রবিবার উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের শিয়ালী গ্রামের সোনাহাটা পাড়ায় তাকে প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় পাকড়াও করে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, সাদ্দাম হোসেন সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক। তার বাবার সঙ্গে ধুনট উপজেলার শিয়ালী গ্রামের সোনাহাটা পাড়ার রুবেল হোসেনের সুসম্পক ছিল। সেই সূত্রে রুবেলের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ের সঙ্গে সাদ্দামের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এই সূত্র ধরে সাদ্দাম প্রায় সোনাহাট বাজারে যেতেন। রবিবার সকাল ১০টার দিকে প্রেমিকার দর্জির দোকানে সাক্ষাৎ করতে যান সাদ্দাম হোসেন। এর বেশ কিছুক্ষণ পর তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় স্থানীয়রা আটক করে বলে অভিযোগ। পরে এ নিয়ে দিনব্যাপী দরবার চলে। সেখানে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে দেয়ার কথা ওঠে। তবে আটকের সময় তিনি রাজি থাকলেও সন্ধ্যার দিকে অসম্মতি জানান।
এর মধ্যে সাদ্দাম হোসেনকে জিম্মি ও জোর-জবরদস্তি করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি আইনিভাবে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সাদ্দামকে থানা হেফাজতে নিতে চায় পুলিশ। এতে মেয়ের পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। এ নিয়েও চলতে থাকে রাতভর আলোচনা।
পরে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলমের নির্দেশে সাদ্দামকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। এক পর্যায়ে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা ওসিকে ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতে বাধা দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা গ্রামবাসীকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করে পুলিশসহ ফিরে যায়।
এ বিষয়ে সাদ্দামের পরিবারের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রেমিকার বাবা রুবেল হোসেনের দাবি, ‘আমার মেয়ের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাকে বিয়ে দিতে হবে। আমি এটার একটা সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ধুনট থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ‘সোনাহাটা বাজারের ঘটনায় সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছে তার কথিত প্রেমিকা। এ মামলায় সাদ্দামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ‘রুবেল হোসেনের মেয়ের করা মামলায় সাদ্দাম হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাতে স্থানীয়দের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল ছেলেকে তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী আমরা তা পারি না। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া কোনো ঝামেলা হয়নি।’
(ঢাকাটাইমস/১৫অক্টোবর/এজে)

মন্তব্য করুন