ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেটকারীদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত: আহমাদুল্লাহ
জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে যে পরিমাণ ভেজাল খাবারের প্রচলন আছে তা অনেক গরীব রাষ্ট্রেও নেই৷ তার সঙ্গে পণ্য মজুদ বা সিন্ডিকেট করে মূল্যবৃদ্ধি আরও বড় সমস্যা। বাজারে যারা সিন্ডিকেট করে তাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে গোটা পৃথিবীতে যে অস্থিরতা বিরাজমান করছে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মুহাম্মদ (স.)-এর জীবন দর্শনের বিকল্প নেই। মুহাম্মদ (স.)-কে যত বেশি পাঠ করা যাবে ততবেশি আমাদের জীবন আলোকিত হবে, স্বার্থক হবে। ততবেশি একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে পারবো।’
বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে বিজ্ঞান ভবন সংলগ্ন মাঠে সীরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আহমাদুল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ‘হযরত মুহাম্মদ (স.) পৃথিবীতে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে এসে সে সময়কার মক্কার সবচেয়ে বর্বর জাতিকে, সে সমাজকে সবচেয়ে সুন্দর জাতি ও সমাজে পরিণত করেছেন। একটি রাষ্ট্রকে আমুল সংস্কার করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়, অথচ মুহাম্মদ (স.) শত সহস্র বাধা পেরিয়ে তিনি তার মিশনে সর্বোচ্চ সফল হয়েছেন। অন্তত কৌতুহলী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হলেও মুসলমানদের তো বটে, অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও রাসূলের সীরাত একবার হলেও পাঠ করা উচিত।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের কামনা ছিল এদেশের তরুণরা নবীর আদর্শে লালিত হবে। কিন্তু এ কারণে অতীতে তাদেরকে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হতো। পাশাপাশি ইসলামিক কার্যকলাপে আমাদের দেশের মুসলিম তরুণরা ধারাবাহিকভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সীরাত সম্মেলনের মাধ্যমে ইসলাম সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। রাসূল (স.)-এর সীরাতের দিকগুলো আমাদের জীবনে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করবো, তাহলেই আমরা প্রকৃত মুসলমান হতে পারবো। মুসলমান হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কারও দ্বারা কোনো প্রকার জুলুম ও অবিচার সংঘটিত না হয়।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘পৃথিবীতে সবকিছুরই সমাধান রয়েছে রাসূল (স.)-এর সীরাতে। রাসূল (স.)- কে প্রশ্নহীন অনুসরণ করতে হবে। আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যদি রাসূল (স.)-এর সীরাত অনুযায়ী চলতে পারি, তাহলেই আমরা সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে থাকতে পারবো।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আজকের সীরাত সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য স্বার্থক হবে যদি আমরা রাসূল (স.)-এর জীবন আদর্শ অনুযায়ী আমাদের নিজেদের জীবন দর্শন পরিচালিত করতে পারি।’
এছাড়া রাসূল (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও তার আদর্শিক জীবন চরিত্র নিয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা মনজুর, ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের পরিচালক শায়খ প্রফেসর মোখতার আহমাদ, মিরপুরের মাসজিদুল জুম’আ কমপ্লেক্সের খতিব শায়খ আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বাহাদুর শাহ জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. আমানুল হক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. ছালাহ্ উদ্দীন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সীরাত সম্মেলন ২০২৪-এর আহবায়ক হিসেবে ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন।
সীরাত সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয় এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হামদ ও নাতে রাসূল পরিবেশিত হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/এজে)