আদানির বকেয়ার জন্য বিগত সরকার দায়ী: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে বকেয়ার প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার আদায়ে ভারতের আদানি গ্রুপের আলটিমেটামের খবরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মর্মাহত হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতির জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
আদানি গ্রুপ আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই বকেয়া পরিশোধ করা না হলে তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করবে বলে আলটিমেটাম দিয়েছে বলে খবর দেয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে তারা বলেছে, বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড গত ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের খবরে সরকার মর্মাহত হয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী।’
‘বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ টাকা পায় এটা সত্য। তাদের পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি বাড়িয়েছি। পূর্বের যে বিল বাকি আছে সেটার জন্য মূলত দায়ী বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিশাল ফাইল অব বেকলট রেখে গিয়েছিল।’
আদানি গ্রুপকে সেপ্টেম্বর মাসে ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করা হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘যেটা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের তরফ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে রেমিটেন্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। পেমেন্ট ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে। সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে করে দিতে পারব।’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় করা ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) বিদ্যুৎ দিচ্ছে।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে।
তবে স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা রয়েছে। ২০১৭ সালে ওই চুক্তি করার ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করা হয়েছিল কি না তা নিয়েও অভিযোগ কম নয়।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার আদানির ঝাড়খণ্ডের গড্ডা প্ল্যান্ট বাংলাদেশে এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
(ঢাকাটাইমস/০৩নভেম্বর/ডিএম)
মন্তব্য করুন