এবার নাফ থেকে ২০ জেলেকে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
টেকনাফে এক মাসে ৭২ মাঝিমাল্লা অপহরণ, মৃত্যু ১
বঙ্গোপসাগরের নাফ নদীর মোহনায় মাছ ধরতে যাওয়া ২০ মাঝিমাল্লাকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি। এ জেলেদের ব্যবহৃত ২টি বোট ও ১৩টি নৌকাসহ জাল নিয়ে যায় তারা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের অদূরে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, বাংলাদেশ জলসীমানা থেকে ১৫টি মাছ ধরার নৌকাসহ ২০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। তারা একটি বড় ট্রলারে করে এসে জেলেদের নৌকাসহ ধরে নিয়ে যায়।
অপহৃত জেলেরা হলেন- মো. হাসিম (৩০), এনায়েত উল্লাহ (৩২), আব্দুল শুক্কুর (৩৫), নুর হাফেজ (২২),মো. হোছেন (২০), মহিউদ্দিন (২২), মো. ইয়াছিন (৩০), আবদু রহিম (২৪), হাসান আলি (৩৩), ওসমান গনি (৩০), আয়ুব খান (৩০), নুর হোছন (২২),শাহ আলম (২২), আসমত উল্লাহ (২০), আব্দুল শুক্কুর (২৬), আবুল হোছেন (১৭), মো. বেলাল (১৮), সলিম (২৭), আবদুল কাদের (২২) এবং ইন্নামিন (৩৫)। তারা সাবারং ইউনিয়নের শাহ পরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগেও মিয়ানমার নৌবাহিনী জেলেদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল। এ সময় একজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এসব ঘটনায় জেলেপল্লীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ ২০ মাঝিমল্লাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।’
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মাঝামাঝি নাইক্ষ্যংদিয়ায় ১৫টি নৌকা মাছ শিকারে যায়। এ সময় মিয়ানমারের আরকান আর্মির সদস্যরা একটি বড় ট্রলারে করে এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২০ জন জেলেকে নিয়ে যায়। এতে জেলেদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মালিকপক্ষ থেকে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ৬টি মাছ ধরার ট্রলারে ৫৮ জন জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। ৯ অক্টোবর এই মাঝিমল্লাদের অপহরণ করে মিয়ানমার নৌবাহিনী। এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে তিনজন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে অন্য জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়। তখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল।
(ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন