পর্যটক বাড়ছে সেন্টমার্টিনে, দ্বীপবাসীর মুখে চওড়া হাসি

ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১১| আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২০
অ- অ+

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বিলম্বে হলেও ভিড় বাড়ছে পর্যটকের। এর ফলে হাসি ফুটেছে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার।

পর্যটকরা বলছেন, পর্যটক আগমনে প্রাণ ফিরবে দ্বীপের, চাঙ্গা হবে সব পর্যটন ব্যবসা, দূর হবে আর্থিক অনটন। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, বিধিনিষেধ বিবেচনা না করে দুই হাজার সীমাবদ্ধ না রেখে তা আরও বৃদ্ধি করলে দ্বীপবাসী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন থেকে অনেকটা ফিরে আসতে পারবে। এখন কক্সবাজার থেকে জাহাজ এসে এক-দুই ঘণ্টার চেয়ে বেশি থাকতে পারে না। বলতে গেলে এখন জাহাজ ভ্রমন হচ্ছে।

সেন্টমার্টিনের স্থায়ী বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ। পেশায় একজন ভ্যানচালক। মৌসুম আসলে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক না আসায় নানা কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে তাকে। তবে এখন দ্বীপে পর্যটক আগমনে মুখে হাসি ফুটেছে নুর মোহাম্মদের।

দ্বীপের বাসিন্দা হোটেল মারমেইডের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পর্যটক না আসাতে দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন দ্বীপে পর্যটক আসতে শুরু করায় অনেক ভালো লাগছে। আশা করছি, এখন খুব ভালোভাবে সংসার চালাতে পারব।’

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার পর প্রাণ ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদেরও। কর্মচাঞ্চল্য এসেছে পর্যটন নির্ভর সব ব্যবসায়। তবে এখনো তুলনামূলক কম। অনেক পর্যটক দ্বীপে এসে রাত্রিযাপন করছেন।

বার্মিজ দোকানি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বেচাবিক্রি না থাকায় দোকান বন্ধ রেখেছিলাম প্রায় ১০ মাস। এখন পর্যটক আসছে তাই দোকানও খুলেছি। মোটামুটি বেচাবিক্রি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভেঙে যাওয়া দোকান এখনো যথাযথ মেরামত করতে পারিনি।’

হোটেল সী-প্রবালের পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর দ্বীপে পর্যটক আসছে। সরকারের বিধিনিষেধের কারণে অনেক কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে হোটেলেও। আজ হোটেলে ১০টি রুম বুকিং রয়েছে। আস্তে আস্তে বাড়ছে পর্যটকের চাপ। আমরা পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করি সবসময়। আশা করি, এই মৌসুমের বাকি সময় বেশ ভালো কাটবে।’

তবে দ্রুত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন দ্বীপের ব্যবসায়ীরা।

সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা ঢাকার মোহসিনুল, তোফা, রিদুয়ান ও আনোয়ার বলেন, অনেকদিন পর দ্বীপে এসে খুব ভালো লাগছে। তবে কক্সবাজার থেকে ৬-৭ ঘণ্টার ভ্রমণ কষ্টকর হচ্ছে। জাহাজ চলাচল টেকনাফ থেকে হলে খরচ-সময় বাঁচবে এবং আরামদায়কও হবে। এখন দ্বীপের জেটির অবস্থা খুবই খারাপ। জেটির সংস্কার করা দরকার। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের দাবি জানাচ্ছি।

দ্বীপের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, জাহাজ চলাচলে বিলম্বে দ্বীপে পর্যটকের আগমন হলেও দারুণ খুশি সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা। প্রয়োজনে সামনের চার মাস জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে দ্বীপবাসী, ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা আরও খুশি হবেন। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সরকারের বিধিনিষেধ ও নিয়মাবলী মেনে এখন কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন তিন-চারটা জাহাজ আসছে। মৌসুমের প্রথমদিন আগত পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে আগত পর্যটকরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন। সেই কারণে জেটিঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে পুলিশ ও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

(ঢাকাটাইমস/৯ডিসেম্বর/এমআই/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা