চলতি মৌসুমে গদখালীতে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্য

বেনাপোল প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৪| আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৪
অ- অ+

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ এসব দিবসকে সামনে রেখে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

চলতি মৌসুমে এসব দিবস ও বিভিন্ন সরকারি-সেরকারি অনুষ্ঠান ঘিরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা। ফুলের দাম বেশি হওয়ায় গতবারের তুলনায় এবার ফুল চাষ বাড়িয়ে দিয়েছেন চাষিরা।

ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালী অঞ্চলে বছরজুড়ে ফুলচাষ হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস ফুলের ভরা মৌসুম। এবার এই অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ১২০০ হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুল চাষ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে ৪-৫ হাজার পরিবার ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত। প্রতিবছর এই অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার ফুল।

দেশে ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে সাধারণত ইংরেজি নববর্ষ, বাংলা নববর্ষ, বিজয় দিবস, বড়দিন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে। এসব দিবসে চাহিদা মেটাতে দেশের অধিকাংশ ফুল সরবরাহ করা হয় এই অঞ্চল থেকে। গদখালীর চাষিরা এসব দিবসকে টার্গেট করেই ফুল চাষ করে থাকেন।

উপজেলার শিমুলিয়া, পানিসারা, হাড়িয়া, শরীফপুর ও গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষিরা দেশের মোট চাহিদার অন্তত ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ করে থাকেন। চলতি বছরে অতি তাপমাত্রা আর অতিবৃষ্টির ধকল কাটিয়ে এই মৌসুমে চাষিরা শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গদখালী বাজারে খুব ভোরে এসব অঞ্চলের ফুলচাষিরা হরেক রকম ফুলের পসরা নিয়ে বসেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা এখান থেকে ফুল কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গদখালীর পানিসারায় মাঠের পর মাঠজুড়ে শুধু গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নানা ধরনের ফুলের সমারোহ।

গদখালী ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস রজনীগন্ধা ৫ থেকে ৭ টাকা, গোলাপ ৬ থেকে ৭ টাকা, গ্লাডিওলাস ১৩ থেকে ১৫ টাকা, জারবেরা ১২ থেকে ১৪ টাকা, ১০০ পিস চন্দ্রমল্লিকা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, এক হাজার গাঁদা ফুল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফুলচাষি পলাশ হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে গোলাপ ও এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন। চারা রোপণ থেকে গাছে ফুল আসা পর্যন্ত গোলাপ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৭০ হাজার ও ৩৫ হাজার টাকা রজনীগন্ধা। খরচ বাদে তার এ বছর প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে গদখালীর ফুলচাষিরা রেকর্ড পরিমাণ টাকার ফুল বিক্রি ও বাজারজাত করতে পারবেন।

ফুলের পাইকারি বিক্রেতা শাহজাহান আলী জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর ও ইংরেজি নববর্ষে বিক্রি খুব ভালো হয়েছে। দামও ভালো পেয়েছি। তবে সামনে দিবসগুলোতে ফুলের চাহিদা ও দাম দুটোই আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর গদখালীতে আগেভাগেই ফুলের সরবরাহ শুরু হয়েছে। ফলে এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর জানান, গত বছরের তুলনায় চাষিরা এবার ফুলের ভালো দাম পাচ্ছে। গেল দুই দিবস ১৬ ডিসেম্বর ও ইংরেজি নববর্ষে দাম পেয়ে ভালো লাভ করেছে চাষিরা। বর্তমান বাজার মূল্য যদি এভাবে থাকে তাহলে সামনে যেসব দিবসে এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ঘিরে গদখালী থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছি। এতে করে এই এলাকার ফুলচাষিরা বেশি লাভবান হবেন এবং বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা।

(ঢাকা টাইমস/০৬জানুয়ারি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা