ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়ি মেরামত করছে কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৭| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৭
অ- অ+

একজনকে দেশজুড়ে চেনে কাওয়া কাদের নামে। সন্ত্রাস ও উল্টাপাল্টা কাজে আরেক ভাইয়ের নামের পাশে তকমা জোটে পাগলা মির্জা। ৫ আগস্টের পর এই দুই ভাইয়ের পৈতৃক বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। লোকজন এখন তাদের বলছে নোয়াখালীর কলঙ্ক। চলুন দেখে আসি বসুরহাটের সেই বাড়ি এখন কেমন আছে, তাদের নিয়ে কী বলছে মানুষ!

গাড়ি থেকে নামতেই শান্ত-সুশীতল পরিবেশ। পুকুরের এক পাড়ের কোণে সাদা রঙের তিনতলা মসজিদ, তার পাশে পুকুরঘাট, সেখানে চৌচালা শেডের নিচে বসার জায়গা; তারপর হলুদ রঙের কাচারি ঘর। বাংলার সম্পন্ন গেরস্থবাড়ির বহিরাঙ্গনের চিরায়ত চিত্র। কিন্তু এই সুন্দরের পিছনে দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত দুই ভাইয়ের বাড়ি। ওবায়দুল কাদের আর তার ভাই কাদের মির্জার পৈতৃক বাড়ি এটি।

মসজিদের পাশ দিয়ে সারি সারি উঁচু নারিকেল গাছ আর শাখা-পল্লব ছড়ানো মেহগণির ছায়াপথ ধরে পা বাড়াতেই চোখে পড়ে জনতার ঘৃণার চিহ্ন। দোতলা বাড়ির আঙিনায় পড়ে আছে আগুনে পোড়া পাজেরো গাড়ির কঙ্কাল। এটি ব্যবহার করতেন কাদের মির্জা। বাড়ির ভেতরের দিকে একটি ঘরের পেছনে রাখা প্রাইভেট কারটিরও একই দশা, যেটি মাঝে মাঝে বের করতেন কাদের মির্জার ছেলে তাসরিক।

আশপাশে নজর ঘোরালে দৃশ্যপটে আসে ভাঙচুর, লুটপাট আর আগুনের ক্ষত নিয়ে দাঁড়ানো একেকটি ঘর। যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো বাড়ি যেন। চারপাশে পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপ। পোড়া লোহার ফটক, পোড়া কাঠ, কয়লা হয়ে যাওয়া দরজা, ভেঙে পড়া টিনের চাল, পোড়া দেয়াল, ভাঙা কমোড কত কী। ওবায়দুল কাদেরের বাবার নামে গড়া পাঠারগারও ধ্বংস হয় জনতার ক্ষোভের আগুনে।

কাদের মির্জা যেখানে ঘুমাতেন, দোতলা বাড়ির সব কটি কক্ষ শূন্য। কিচ্ছু নেই, কেউ নেই বাড়িজুড়ে। বাড়ির লোকজন কোথায গেছে কেউ জানে না। ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর দুপুরে লুটপাট হয় সব। এমনকি দরজা-জানালাও। কী পরিমাণ ঘৃণা আর ক্ষোভ জমা হলে মানুষ এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে, বোঝা গেল স্থানীয় মানুষের কথায়।

আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নোয়াখালীর কলঙ্ক বলছেন তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনের মানুষ। তারা বলছেন দেশের সব অন্যায়-অবিচারের মাস্টার মাইন্ড এই ওবায়দুল কাদের।

আর কাদের মির্জাকে বলা হয় কোম্পানিগঞ্জ-বসুরহাটের সন্ত্রাসী। পৌরসভার এই সাবেক চেয়ারম্যানের আরেক নাম মিস্টার ১০ পার্সেন্ট। সরকারি সব কাজে তাকে দিতে হয় এই ভাগ। ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইসরাতুন্নেছার বিরুদ্ধেও আছে কমিশন-বাণিজ্যের অভিযোগ। তিনিও নেন ১০ পারসেন্ট করে।

এলাকায় খুব একটা আসতেন না ওবায়দুল কাদের। তার হয়ে ছোট ভাই কাদের মির্জা নিয়ন্ত্রণ করেন সবকিছু। হেলমেট বাহিনী, হাতুড়ি বাহিনী ও টর্চার সেলসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজের মাধ্যমে কোম্পানীগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করেন কাদের মির্জা।

তার বাহিনী বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, নিজ দলের নেতাকর্মী এবং ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাতেন কাদের মির্জা। তার নির্যাতন থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়ে অনেক নেতাকর্মী।

জনরোষে বিধ্বস্ত বাড়িটিতে চলছে সংস্কার কাজ। কিন্তু কারা করছে এই সংস্কার, খুঁজে পাওয়া যায়নি কাউকে। স্থানীয় মানুষও বলতে পারছে না কিছু।

স্থানীয় লোকজন মনে করেন, মানুষের ওপর ছোট ভাই মির্জা কাদেরের নির্যাতন-নিপীড়নে সায় ছিল ওবায়দুল কাদেরের। আর ছাত্র আন্দোলন দমনে ওবায়দুল কাদেরের ভয়াবহ নির্দেশনার কথা সবার জানা। দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জনতার।

(ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কাতারের আমিরকে ধন্যবাদ জানিয়ে পত্র তারেক রহমানের
বিএনপির সমাবেশে সাংবাদিক পরিচয়ে শিবিরকর্মী!
৫ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
হঠাৎ অসুস্থ লুৎফুজ্জামান বাবর, নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা