আশ্রয়ণের ঘর যেন মরণফাঁদ

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
  প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৯
অ- অ+

গৃহহীন মানুষগুলো মাথা গোঁজার একটা স্থায়ী আবাস পাবেন, তাও আবার বারান্দাসহ দুই রুমের পাকা ঘর, রান্নার ঘরও সঙ্গে, এটা কল্পনাও করেননি কখনো। কিন্তু তাদের ভাগ্যে সেটি জুটেছিল। নিজের ঠিকানা পেয়ে খুশি হয়েছিলেন তারা।

কিন্তু তাদের এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কয়েক বছর না যেতেই এখন তাদের দিনরাত কাটে আতঙ্কে। না জানি কখন ভেঙে পড়ে মাথায়। ঝড়বৃষ্টির মতো দুর্যোগের সময়ে ঘর থেকে বেরিয়ে ছুটোছুটি করতে হয় নিরাপদ আশ্যয়ের জন্য। আশ্রয়ণের ঘর যেন পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে।

গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুস্থদের ঘর বানাতে গিয়েও কী পরিমাণ লুটপাট হয়েছে, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো যেন আরেক সাক্ষী।

মাত্রই কয়েক বছর আগে বানানো ঘরগুলোর দেয়ালে এখন হাত লাগলেই খসে পড়ে আস্তরণ, ফাটল ধরেছে দেয়ালে ও মেঝেতে। কোথাও কোথাও দেবে গেছে মেঝে।

বাসিন্দারা জানান, সামান্য ঝড়ো বাতাসে কেঁপে ওঠে ঘরগুলো। বৃষ্টি এলে চালের টিনের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে। এমন বেহাল দশার কারণে বরাদ্দ পাওয়া অনেক পরিবার আশ্রয়ণের ঘর ছেড়ে বসবাস করছেন অন্যত্র।

সন্তানদের বাড়িতে ঠাঁই না হওয়া আবদুর রউফ স্ত্রীসহ উঠেছিলেন ফেনী শহরতলীর ধর্মপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। মাথা গোঁজার ঠিকানাটুকু পেয়ে খুশি হলেও এখন প্রতিটি দিন যায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়। ঘরগুলো মেরামতের দাবি জানান তারা।

এ আশ্রয়ণের সমাজ কমিটির সভাপতি মো. ফারুক বলেন, হাত লাগলেও ঘরে আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে।

রাবেয়া খাতুন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘৫০টির বেশি পরিবার বসবাস করলেও নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মানুষ মরলে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। মনে হয় কোনো এক গহিন জঙ্গলে বসবাস করছি আমরা।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই ঘরগুলো প্রথমত রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলছে, ফলে অনেকের ঘর থাকলেও এই প্রকল্পের ঘর নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, এসব ঘর নির্মাণে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে।

সংগঠনের ফেনী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এসব ঘর নির্মাণে রীতিমতো লুটপাট হয়েছে। বরাদ্দের অর্ধেক টাকাও ব্যয় হয়নি নির্মাণকাজে। কোনোরকমে জোড়াতালি দিয়ে করা হয়েছে ঘরগুলো।’

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে তারা সংস্কারের কাজ করবেন। ঘরগুলো দুরবস্থার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কয়েক মেয়াদে ভূমি মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সর্বমোট ১ হাজার ৮২০টি ঘর নির্মাণ করা হয় ফেনীতে।

(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা