গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতা আহত

গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আকাশ এবং সদস্যসচিব জিম।
সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার বাণিজ্য মেলায় একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর আকস্মিকভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে তারা গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকাশ ও জিম বাণিজ্য মেলায় একটি স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন মুখোশধারী যুবক হঠাৎ তাদের ঘিরে ফেলে এবং কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে।
হামলাকারীরা আকাশের বুকে এবং জিমের হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ রহমান জানান, রাত ১১টার পর দুই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনের বুকের বাঁ পাশে গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে, যা ধারালো অস্ত্রের আঘাত বলে মনে হচ্ছে।
তিনি জানান, আহতদের চিকিৎসা চলছে, তবে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে।
এদিকে এই হামলার ঘটনার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা গাইবান্ধা সদর থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা দাবি করেন, এই হামলা গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদ হাসান রিয়াদ বলেন, আমরা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নই। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি। অথচ আমাদের নেতাদের হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
সংগঠনের নেতারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে তারা জেলাজুড়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
অন্যদিকে এই হামলার ঘটনায় স্থানীয়রাও ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রফিকুল ইসলাম নাম েএক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাণিজ্য মেলার মতো জনবহুল জায়গায় যদি এভাবে হামলা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? প্রশাসনের উচিত দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা।’
পাশাপাশি এই হামলার ঘটনায় গাইবান্ধার রাজনৈতিক ও নাগরিক মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আর না হয়।’
(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন