হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি: ইউএনওসহ ১৬ জনের নামে মামলা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৫৭
অ- অ+

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লায় সাবেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার খলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক পতাকী রঞ্জন দাস (৬৭) মামলাটি দায়ের করেছেন।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মল্লিক মো. মঈন উদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন অভিযোগ আমলে নিয়েছেন।

মামলার বাদী পতাতী রঞ্জন দাস জানান, হাওরে আমার অনেক জমি। হাওরের কৃষকদের স্বার্থেই আমি মামলা করেছি। হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই কাজে গাফিলতি হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে গঠিত উপজেলা কমিটির সভাপতি হচ্ছেন ইউএনও এবং সদস্যসচিব হলেন ওই উপজেলায় দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী।

মামলার আসামিরা হলেন— শাল্লার সাবেক ইউএনও এস এম তারেক সুলতান, শাল্লার দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী; শাল্লা উপজেলায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের ২২ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি মো. হাসিম উদ্দিন, সদস্যসচিব মিনাদুল মিয়া; ৫৮ নম্বর পিআইসির সভাপতি মজনু মিয়া, সদস্যসচিব ফজলুল হক; ২৪ নম্বর পিআইসির সভাপতি কালাম মিয়া, সদস্যসচিব ফজল মিয়া; ৪৫ নম্বর পিআইসির সভাপতি আবদুল কাদির মিয়া, সদস্যসচিব সরাফত আলী; ৭৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি কালীপদ দাস, সদস্যসচিব প্রভাত দাস; ৭৮ নম্বর পিআইসির সভাপতি সুজিত চন্দ্র দাস, সদস্যসচিব সমীরণ দাস; ৫৯ নম্বর পিআইসির সভাপতি দীপক চন্দ্র দাস ও সদস্যসচিব পবিত্র মোহন দাস।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের নীতিমালা (কাবিটা) অনুযায়ী স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে পিআইসির মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য হাওর এলাকায় বাঁধের নিকটবর্তী জমির মালিক ও উপকারভোগীদের সম্পৃক্ত করে পিআইসি গঠন করার কথা উল্লেখ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সদস্যসচিব আবশ্যিকভাবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব পিআইসি গঠন করবেন। গঠিত পিআইসিগুলো ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করে অবশ্যই ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করবে। কিন্তু উল্লিখিত অনেক পিআইসির সভাপতি ও সদস্যসচিব সংশ্লিষ্ট বাঁধের পার্শ্ববর্তী জমির মালিক নন, এমনকি উপকারভোগীও নন এমন লোকজনকে নিয়ে পিআইসি গঠন করেন।

উল্লিখিত সব বাঁধের নিকটবর্তী জমির মালিকদের অজ্ঞাত কারণে কোনো কমিটিতেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উপজেলা কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত না নিয়ে আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে পিআইসিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে পিআইসি গঠন করে সম্পূর্ণ বাঁধের কাজ না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে,১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা। সে অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার সময়সীমা শেষ হচ্ছে। সুনামগঞ্জের জেলায় এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬ প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন হাওলাদার জানান,আমাদের বাঁধের কাজের অগ্রগতি ৯০ ভাগ হয়েছে। তবে সাত দিন সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি। আর এই সময়ের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আসলেই কি আ.লীগ নিষিদ্ধ হবে নাকি নিষিদ্ধের ধোঁয়া তুলে রাজনীতি হবে?
চট্টগ্রামে সহপাঠীতে হাতে খুন হলো খুদে ক্রিকেটার রাহাত
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শিশুর মৃত্যু 
বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে বসুন্ধরা থেকে ২ নারী গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা