অবৈধভাবে ভারতের লংথ্রাইপুঞ্জি গিয়ে বাংলাদেশি নিখোঁজ

সীমান্তে দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার লংথ্রাইপুঞ্জি এলাকায় গিয়ে ফিরে আসেনি সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার বাসিন্দা কুটি মিয়া (৫০)। নিখোঁজ কুটি মিয়া দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া গ্রামের মৃত মনির উল্ল্যাহর ছেলে।
শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কুটি মিয়া বাংলাদেশে ফিরে না আসায় তার পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে আহাজারি চলছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারণা ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে তিনি আহত বা নিহত হয়েছেন।
কুটি মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম বলেন, আমার স্বামী বৃহস্পতিবার সকালে গরুর ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এখন পর্যন্ত তার কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। কোথায় আছেন তাও জানি না।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি বলেন, লোক মুখে শুনতেছি আর অনেকেই বলছেন, ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু আমরা এখনো তার আহত কিংবা নিহত হওয়ার খবর পাইনি। ভারতে তিনি কী অবস্থায় আছেন, সেটাও আমাদের জানা নেই। তারা ছয়জন ভারতে ঢুকে পাঁচজন ফিরে এসেছেন, এটা জেনেছি।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিনের বেলা দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ছয় বাংলাদেশি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার লংথ্রাইপুঞ্জি এলাকায় খাসিয়াদের বাগান থেকে সুপারি আনার জন্য প্রবেশ করেন। বিকালে ফেরার সময় সুপারি বস্তায় ভরেন তারা। ভারতীয় খাসিয়ারা তাদের দেখে ফেলায় তারা দৌড়ে পালিয়ে বাংলাদেশের আসার চেষ্টা করে পাঁচজন সীমান্ত পার হয়ে আসতে পারলেও কুটি মিয়ার আর ফেরা হয়নি। তবে তখন গুলির শব্দ শোনা যায়। কুটি মিয়া সেই গুলিতে আহত বা নিহত হয়ে থাকতে পারেন।
পালিয়ে আসা ছয়জন হলেন- ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক মিয়া (৫০), মৃত এরাবুল্লাহর ছেলে আকবর আলী (৩১), আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), জরিফ উদ্দিন (৪৫), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫) ও মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)।
তাদের মধ্যে খোকন মিয়া ও হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে বিজিবির চোরাকারবারি মামলা রয়েছে। কুটি মিয়া ও জরিফ উদ্দিনও চোরাকারবারি বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল একে এম জাকারিয়া কাদির সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল (১০ এপ্রিল) ছয়জন ভারতের অভ্যন্তরে প্রায় ৭ থেকে ১০ কিলোমিটারে দূরে গিয়েছিল। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় পাঁচজন ফেরত এসেছেন একজন এখন পর্যন্ত আসতে পারেনি। তবে আমরা জানতে পেরেছি, ভারতে সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল তারা। তার বর্তমান অবস্থানের বিষয়ের তথ্যের জন্য আমরা কাজ করছি।
তিনি আর বলেন, আমরা যেটা জানতে পেরেছি, তাদের ছয়জনই চোরাকারবারি। তাদের মধ্যে দুজনের নামে বিজিবির মামলা রয়েছে। ভারত থেকে ফেরা পাঁচজনই পলাতক রয়েছেন। তাদের আটক করতে আমাদের অভিযান চলছে।
(ঢাকাটাইমস/১১এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন