মেঘনার ভাঙনের আতঙ্কে সরাইলের পানিশ্বর-আজবপুর

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  প্রকাশিত : ২১ মে ২০২৫, ১০:৫৮| আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ১১:৪৬
অ- অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের মেঘনা তীরবর্তী প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা, চুন্টা ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের আজবপুর ও নরসিংহপুর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে শতাধিক পরিবার। ৭-৮ বছরে এ নদীভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই ইউনিয়নের ছয় গ্রামের সহস্রাধিক বাসিন্দা।

সরজমিনে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর পূর্ব পাড়ে পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, সাখাইতি, সোলাবাড়ি ও লায়ারহাটি গ্রামের ঘরবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চাতালকলসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের শিকার হয়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীভাঙনের কবলে থাকা কয়েকশ পরিবার আতঙ্কে দিন পার করছে।

পানিশ্বর ইউনিয়নের লায়েরহাটির বাসিন্দা ওসমান গণি বলেন, “এই ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের বাসিন্দাদের দিনরাত কাটে ভাঙনের আতঙ্কে।”

তিনি আরও জানান, তার নিজস্ব চৌধুরী অটো রাইসমিল নামক চাতালকলটি অধিকাংশই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেটুকু আছে তাতে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও শুধু লায়েরহাটির খাজা বাবা, পপুলার, শাহ আরেফিন, আজমেরী, খাজা, হাজী, নওশিন আক্তার নামক অটো রাইসমিলগুলো ভাঙনের শিকার হয়েছে।

এছাড়া লায়েরহাটির নুর ইসলাম, আ. আজিজ, মজম মিয়া, জজ মিয়া, শামসু মিয়া, শহীদ মিয়া, হান্নান মিয়া, আক্তার মিয়া ও রুহুল আমিনের বাড়িসহ ১০-১২টি বাড়ি ধসে গেছে নদীতে। লায়েরহাটি দক্ষিণ প্রান্তে ইসমাইল শাহর মাজারটিও ভাঙার পথে। সমগ্র পানিশ্বর এলাকার ২০টি চাতাল কল ও শতাধিক বাড়ি ভাঙনের শিকার হয়েছে। এবারও নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে প্রতিরোধের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান গ্রামবাসী।

পানিশ্বর ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী যুবক মো. সফিক বলেন, “হাজারো পরিবার নদীভাঙনের হুমকির মুখে। হুমকির মুখে অর্ধশত চাতাল মিল। ২০১৮ সাল থেকে ভাঙন শুরু হয়ে এ পর্যন্ত ২০টি চাতাল কল ও শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অতীতে জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ীভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করা হলেও স্থায়ী কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই জনপদ নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় আছে।”

আজবপুর বাজার ও নরসিংহপুর গ্রামেও ভাঙন দিনদিন বাড়ছে। চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে আজবপুর-নরসিংহপুরসহ ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী যেকোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর রহমান বলেন, “মেঘনা নদীভাঙন রোধে পানিশ্বর এলাকায় স্থায়ীভাবে মেঘনার বামতীরে প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণের ২০২১ সালে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে, এখনো অনুমোদন হয়নি। চুন্টার আজবপুর এলাকায় অস্থায়ীভাবে মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধে ৪ হাজার ৫৯০ বস্তা জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, “চুন্টা ও পানিশ্বর এলাকার নদীভাঙন সরজমিনে দেখে আজবপুর এলাকায় অস্থায়ীভাবে মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দেড় লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে আর পানিশ্বর এলাকায় নদীভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।”

(ঢাকাটাইমস/২১মে/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টিকটক ভিডিও বানাতে ফটোগ্রাফারকে খুন করে ক্যামেরা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১০
ঈদে বিকাশ-এ সর্বোচ্চ রেমিটেন্স গ্রহণ করে প্রতিদিন হাইসেন্সের ফ্রিজ-টিভি জেতার সুযোগ
সভা শেষে উপজেলা চত্বর থেকে একসঙ্গে ছয় ইউপি চেয়ারম্যান আটক 
অটোপাসের দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপর হামলা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা