টিকটক ভিডিও বানাতে ফটোগ্রাফারকে খুন করে ক্যামেরা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১০

রাজধানীর হাজারীবাগ থানার জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া এলাকায় ফটোগ্রাফার নূরুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. নাঈম আহম্মেদ (২০), মো. শাহীন অকন্দ ওরফে শাহিনুল (২০), মো. শাহীন চৌকিদার (২২), মো. রহিম সরকার (১৯), মো. নয়ন আহম্মেদ (১৯), রিদয় মাদবর (১৮), মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), মো. আনোয়ার হোসেন (১৯), মো. শহিদুল ইসলাম (২০) এবং মো. আরমান (১৮)।
মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইকৃত দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, একটি চাপাতি, একটি রামদা এবং একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মতিঝিলের এজিবি কলোনির বাসিন্দা নূরুল ইসলাম (২৬) পেশায় ফটোগ্রাফার ছিলেন। তিনি বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ করতেন। ১৫ মে অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বর থেকে তাকে বিয়ের ছবির জন্য বুকিং দিয়ে ৫০০ টাকা বিকাশে অগ্রিম পাঠানো হয়। পরের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নূরুল তার সহকারী ইমন (নুরে আলম) নিয়ে ধানমন্ডির শংকর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছান। সেখানে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়। এরপর তারা অটোরিকশায় করে রায়েরবাজার জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে ঋষিপাড়া এলাকায় তাদের রিকশার গতিরোধ করা হয়। ইমন রিকশা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে গেলেও নূরুলকে ধরে তাদের ধারালো চাপাতি দিয়ে মাথা, ঘাড়, বাহু ও আঙুলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দুটি ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। নূরুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুষ্কৃতকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নূরুলের বড় ভাই ওসমান গনি হাজারীবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
রমনা বিভাগের ডিসি আরও জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করে ঢাকা ও ময়মনসিংহে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ১৮ থেকে ২০ বছরের যুবক।
পুলিশ জানায়, গ্রুপের প্রধান নাঈম। তারা মূলত টিকটক গ্রুপের সদস্য, যারা মোবাইলে ভাল রেজুলেশন না পাওয়ায় ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিল। ঘটনাস্থলে নাঈম শংকর বাসস্ট্যান্ডে নূরুল ও ইমনের সঙ্গে দেখা করে এবং অটোরিকশায় বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়। পরে ঋষিপাড়ায় ক্যামেরা ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২১মে/এলএম/এসএ)

মন্তব্য করুন