কেন চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান হারুন? যা জানা গেল

চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারুন-অর-রশিদের।
সোমবার সকালে ক্লাবটির ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে তার উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে রবিবার বিকালে ক্লাবের ওই রুমে ওঠেন সাবেক সেনাপ্রধান; এদিন তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান।
জানা গেছে, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের সভাপতি ছিলেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের মামলায় নাম ছিল হারুন অর রশিদের। বেশ কিছুদিন ওই মামলায় কারাগারেও থেকেছেন তিনি। মূলত ডেসটিনির বিরুদ্ধে হওয়া ২০২৩ সালের একটি মামলায় হাজিরা দিতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন হারুন। কিন্তু সেই হাজিরা আর দেওয়া হলো না তার।
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমিন জানিয়েছেন, একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে চট্টগ্রাম যান হারুন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে হলেও থাকতেন ঢাকায়।
চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন গণমাধ্যমে বলেন, ‘হারুন অর রশিদ ক্লাবের গেস্টহাউসের একটি কক্ষে একা ছিলেন। অনেক বেলা পর্যন্ত তিনি কক্ষ থেকে বের না হওয়ায় ক্লাবের লোকজন বিচলিত হন। বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কক্ষের তালা খুলে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।’
আশরাফ উদ্দিন আরও বলেন, চিকিৎসকদের ধারণা কক্ষের মধ্যে রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তারা সাবেক সেনাপ্রধানকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে তারা জানিয়েছেন।’
সেনাবাহিনীর ২৪তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন হারুন অর রশিদ। ১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন। শুরুতে ইঞ্জিনিয়ার কোরে যেতে চাইলেও কোম্পানি কমান্ডারের পরামর্শে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সেনা ক্যারিয়ারে তিনি কুমিল্লার ৪র্থ ইবিআর-এ প্রথম পোস্টিং পান।
পরবর্তীতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তিনি জর্জিয়ায় বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তিনি একাডেমিক মনোভাবের জন্য পরিচিত ছিলেন। আর্মি স্টাফ কলেজ এবং পদাতিক ও কৌশল স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। অবসরের পর তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি হন।

মন্তব্য করুন