‘বেগুন গাছে টমেটো’ চাষে শহিদুল্লাহর চমক, লাভের মুখ দেখছেন কৃষকেরা

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কৃষক মো. শহিদুল্লাহ বর্ষা মৌসুমে ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে এলাকাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। গ্রাফটিং বা কাটিং কলম প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনি জংলি বেগুন গাছে টমেটোর চারা লাগিয়ে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছেন।
রাস্তার ধারে ও বাঁশঝাড়ের পাশে পরিত্যক্ত কাঁটাযুক্ত বেগুন গাছে এখন ঝুলছে পাকা টমেটো। এ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্তের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বিষমুক্ত এই অসময়ের টমেটো কিনতেও পাইকারদের আগ্রহ তুঙ্গে।
স্থানীয় কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, প্রথমে বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও এখন নিজ চোখে দেখে বিস্মিত তিনি। আরেক কৃষক সুরুজ আলী বলেন, জীবনে প্রথম দেখলেন বেগুন গাছে টমেটো ফলতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের আওতায় তাঁতকুড়া গ্রামের শহিদুল্লাহ পলিনেট হাউজে ৫ জুন টমেটোর চারা রোপণ করেন। মাত্র ৬৭ দিনে ফলন এসেছে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র সরকার জানান, পলিনেট ব্যবহারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগবালাই থেকে ফসল সুরক্ষিত থাকে, সার ও কীটনাশকের খরচও কমে। বর্ষা মৌসুমের টমেটোর প্রধান শত্রু ‘ঢলেপড়া’ রোগ এ গ্রাফটিং পদ্ধতিতে একেবারেই হয়নি। এক হাজার গাছের মধ্যে ৯৯৮টিতে সফলভাবে টমেটো এসেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, কৃষকেরা আগে এ প্রযুক্তি জানতেন না। নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দেওয়ার ফলে এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে।
শহিদুল্লাহ জানান, ১০ শতাংশ জমিতে চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। প্রথম দফায় টমেটো বিক্রি করে আয় হয়েছে ৭০ হাজার টাকা, আরও ৪০-৪৫ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হবে। প্রতি কেজি টমেটো ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, “জংলি বেগুন গাছে গ্রাফটিং করা সহজ, কোনো রোগবালাই নেই, কীটনাশক লাগেনি। ফলে একেবারেই বিষমুক্ত টমেটো উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি।”
এই সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। শহিদুল্লাহ এখন এলাকায় মডেল কৃষক হিসেবে পরিচিত।
(ঢাকাটাইমস/১৪ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন