চিকিৎসকের অ্যাপ্রোন পরে ঘুরছিলেন তরুণী, অতঃপর...
সাদা অ্যাপ্রোন গায়ে চিকিৎসক সেজে এক তরুণী স্বচ্ছন্দে ঘুরছিলেন হাসপাতালে। নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দেওয়া তরুণীটি নাকি এসেছেন এক আত্মীয়কে চিকিৎসা দিতে। কিন্তু ওই বিভাগের কেউ তাকে চেনে না। অতঃপর আনসার সদস্যদের হাতে আটক হয়ে পুলিশে সোপর্দ পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা নামের তরুণীকে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিক্যালের নাক-কান-গলা বিভাগ থেকে আনসার সদস্যরা তাকে আটক করেন। নরসিংদীর মনোহরদী সদরের আরওয়াদিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা ঢাকায় বকশিবাজার এলাকায় থাকেন।
আটক হওয়ার সময় স্বর্ণা দাবি করেন, পূর্বপরিচিত এক রোগীকে চিকিৎসা করাতে এসেছেন তিনি। কিন্তু গায়ে অ্যাপ্রোণ কেন প্রশ্নের জবাবে বলেন, চিকিৎসকের অ্যাপ্রোন পরা তার ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে এই কাজ আর করবেন না। স্বর্ণা বারবার বলতে থাকেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। আমি জীবনে আর এ ধরনের অপরাধ করব না।’
হাসপাতালের আনসার প্লাটুন কমান্ডার মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের তৃতীয় তলায় নাক-কান-গলা বিভাগে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী জানান, তার নামের সঙ্গে মিল থাকা এক নারী অ্যাপ্রোন পরে চিকিৎসক পরিচয়ে ঘোরাফেরা করছেন। আনসার সদস্যরা ওই ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসকদের ডেকে তরুণীকে দেখান। কিন্তু কেউ তাকে চেনেন না। পরে তাকে হাসপাতালের পরিচালক এবং উপ-পরিচালকের কাছে নেওয়া হয়। তাদের পরামর্শে পুলিশে সোপর্দ করা হয় তরুণীকে।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক ফারুক বলেন, ওই ভুয়া চিকিৎসককে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই হাসপাতালে গত বছরের ডিসেম্বরেও এমন একটি ঘটনা ঘটে। মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামের এক ভুয়া গাইনি চিকিৎসক গ্রেপ্তার হন সেবার। তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা হলে কয়েক মাস কারাবাস করেন তিনি। সম্প্রতি ছাড়া পেয়ে ফের আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন এই ‘ভুয়া ডাক্তার’।
রোজা মূলত টিকটক সেলিব্রিটি ছিলেন। ঢাকা মেডিকেলে একজন চিকিৎসকের রুমে বসে তিনি ডাক্তার সেজে টিকটক বানাতেন। এতে নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন। রোজার বাড়ি চাঁদপুর সদরে; ঢাকায় তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া থাকেন।
পাপিয়া আক্তার স্বর্ণার বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর রাত আটটায় ঢাকা টাইমসকে জানান, আটক ওই তরুণী তাদের হেফাজতে রয়েছেন। তার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে । এখনো আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্বর্ণার প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আমরা যতটুকু তথ্য পেয়েছি, মনে হচ্ছে তিনি চিকিৎসক নন। তার ব্যাপারে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/এসএস/মোআ)
মন্তব্য করুন