গাইবান্ধায় নির্যাতিত শিশু নয়নের পাশে এসপি-ইউএনও

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:৩৫

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র কদম তলা গ্রামের শিশু নয়ন মিয়াকে দশ হাজার টাকা চুরির অপবাদে গাছের সাথে বেঁধে তিনটি আঙ্গুলে সুঁই ঢুকিয়ে বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডাল দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। ১২ দিনের চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তাকে বাড়ি নিয়ে যান তার মা। নয়নের পরিবারের পাশে থাকার অভিপ্রায়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া নয়নের মাকে একটি সেলাই মেশিন উপহার দেন।

গত ৪ অক্টোবর এ নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে উপজেলা সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র কদম তলা গ্রামে।

এ নিয়ে পরদিন ঢাকাটাইমসে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শিশুটিকে দেখতে যান গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মাসরুকুর রহমান খালেদ।

এর আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া নয়নকে দেখতে যান এবং সে সময় তিনি তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, তিনজন আসামি জামিনে থাকলেও মূল আসামি কবীর এখনও জেলহাজতে রয়েছে। দ্রুত এ মামলার চার্জসিট আদালতে দাখিল করবে বলেও জানান তিনি।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিশু নয়ন নির্যাতনের শিকার। এই শিশুটি এতিম। বাবা মারা গেছে বছর দুয়েক আগে। একা মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে তাদের দুই ভাইকে বড় করে তুলছেন। মাকে সাহায্য করার জন্য নয়ন অন্যের মুরগির খামারে কাজ নেয়। খামারের মালিক চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে বেদম প্রহার করলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে।

উপজেলা প্রশাসন শিশু নয়ন ও তার পরিবারের পাশে আছে সব সময় থাকবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র কদম তলা গ্রামের শিশু নয়ন মিয়াকে দশ হাজার টাকা চুরির অপবাদে গাছের সাথে বেঁধে রেখে তিনটি আঙ্গুলে সুঁই ঢুকিয়ে বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডাল দিয়ে নির্যাতন করা হয়। শিশু নয়ন অভাবের তাড়নায় কাজের ছেলে হিসেবে দৈনন্দিন কাজ করত একই গ্রামের ফিড ব্যবসায়ী ফরিদ হাজীর ছেলে কবীরের বাড়িতে।

গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে কবীর নয়নকে বলে যে তুই আমার দশ হাজার টাকা চুরি করেছিস, টাকা ফেরত দে- তা নাহলে তোকে জানে শেষ করে ফেলব। নয়নকে নানাভাবে কবীর ভয় ও হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে শিশু নয়নের বিধবা মাকে ডেকে এনে দশ হাজার টাকা দাবি করে।

নয়ন বলে আমি কোন টাকা নেইনি, তাহলে কোথা থেকে টাকা দেব। এভাবে তর্ক্ল-বিতর্কের পর কৌশলে নয়নের মাকে কবীরের বাড়ি হতে তাড়িয়ে দিয়ে নয়নকে গাছের সাথে বেঁধে বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডাল দিয়ে মারতে শুরু করে। এমনকি নয়নের তিনটি আঙ্গুলে সুঁই ঢুকিয়ে দিয়ে নয়নকে নির্যাতন করা হয়।

নয়নের মা ছেলের নির্যাতনের কথা শুনে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কর্তব্যরত ওসিকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক বামনডাঙ্গা পুলিশ নয়নকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় শিশু নয়নের মা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :