সাংবাদিক হেনস্তা: শোভন-রাব্বানীর দুঃখপ্রকাশ
ঢাকাটাইমসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদককে হেনস্তা করায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এসএম) শাখা ছাত্রলীগের ‘বহিষ্কৃত’ সভাপতি মেহেদী হাসানকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঘটনায় জড়িত হল শাখার সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ধ্রুব রায়হান ওরফে রনিকেও সাময়িক বহিষ্কার করে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগ শোক দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভা শেষে প্রটোকল দেওয়া নিয়ে হাতাহাতি হয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকাটাইমস।
সংবাদ প্রকাশের পর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকাটাইমসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক এন এইচ সাজ্জাদের রুমে যান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ধ্রুব রায়হান ওরফে রনি। তিনি রুমে গিয়ে সাজ্জাদকে মেহেদী ডাকছে বলে সঙ্গে যেতে বলেন। ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদক নিজ কক্ষ থেকে বের হতে অস্বীকৃতি জানালে রায়হান তার সাথে দুর্ব্যবহার করে তাকে জোর করে টেনে রুমের বাইরে নিয়ে আসেন।
ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার কাছ থেকে ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সহ-সম্পাদক মিসবাহুল হক ও ভোরের পাতার নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদ জামান। এক পযায়ে তাদের বাধার মুখে ফিরে যায় ধ্রুব রায়হান।
পরে বিষয়টি ঢাবি সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে ছাত্রলীগকে জানানো হলে সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী দুঃখপ্রকাশ করেন।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ঘটনাটি অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। সাংবাদিকরা আমাদের বন্ধু, শত্রু নয়। এই ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করি। ভবিষ্যতে এই রকম কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।’
মেহেদী হল ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা জানিয়ে রাব্বানী বলেন, ‘বিভিন্ন সময় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তাকে আগেই হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’
ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের দায়ে মেহেদীকে হল থেকে বের হয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সে হল ছেড়ে না গেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
অন্যদিকে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চোধুরী শোভন বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইকে লাঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে বলে আমরা দুঃখিত। এই ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’
ছাত্রলীগ ভবিষ্যতে এই ধরণের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেবে না বলেও আশাপ্রকাশ করেন এই ছাত্র নেতা।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিবাগের পিকক বারে মদ কিনতে গিয়ে বার বন্ধ পান মেহেদী। সেসময় দোকান খোলা নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়। এরই একপর্যায়ে কর্মচারীরা তাকে মারধর করে। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ঘটনাটি হলে জানালে হলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক দিদার শতাধিক কর্মী নিয়ে শাহবাগে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। তাদেরকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় পরের দিন মেহেদী হাসানকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরের কমিটিতে (সোহাগ-জাকির) কোনো পদ পায়নি মেহেদী হাসান।
ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/এনএইচএস/ডিএম