মেঘনায় জাগা চরে শহররক্ষা বাঁধ হুমকিতে
চাঁদপুর শহরের মোলহেডের বিপরীতে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে গত বছর হঠাৎ জেগে ওঠে একটি চর। এটি সাধারণ মানুষের নজরে এলে শুরু হয় সেখানে আসা-যাওয়া ও সময় কাটানো। চলতি বছরের শুরু থেকে বাড়তে থাকে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি তুলছেন চরটি পর্যটন এলাকা ঘোষণা করার। কিন্তু জেগে ওঠা চরের কারণে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অবশ্য এ নিয়ে এখনই কোনো কিছু ভাবছেন না চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডাব্লিউটিএ। কারণ পশ্চিম পাড়ে জেগে ওঠা চর পূর্ব পাড়ে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে প্রভাব পড়ে কি না সেটি খতিয়ে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বরত চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
জেগে ওঠা চরে গিয়ে দেখা যায়, শহরের কয়েকজন স্থানীয় যুবক স্বপ্ন ট্যুরিজম নাম দিয়ে চরের মধ্যে সমুদ্রসৈকতের মতো বিচচেয়ার, অস্থায়ী কেন্টিন, টয়লেট ও চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা করেছেন। শহরের মুলহেড থেকে ওই চরে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫-২০ মিনিট। তাই প্রতিদিন ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলার দিয়ে যাতায়াত করেন ভ্রমণপিপাসুরা।
স্বপ্ন ট্যুরিজমের সদস্য হাসান পাটোয়ারী জানান, ‘মেঘনায় জেগে ওঠা চরে মানুষের আগমন দেখে আমরা এটা পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করি। ইতিমধ্যে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করেছি।’
তরুণরা চর নিয়ে পর্যটনের সম্ভাবনা দেখলেও স্থানীয় বয়স্ক ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন শহর রক্ষা বাঁধ ভাঙনের।
মেঘনা নদীর তীরে বসত চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ^র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারীর। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে দেখেছি এক পাড়ে চর জেগে উঠলে বিপরীত পাড়ে পানির ¯্রােতে ভাঙনের আশঙ্কা থাকে। যে চরটি জেগে উঠেছে, সেটি আমি দেখেছি। এটি দিন দিন বড় হচ্ছে। এভাবে চরটি আরো এক বছর বাড়তে থাকলে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে।’
নতুন চরটির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, ‘এটি শহর রক্ষা বাঁধে প্রভাব ফেলবে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। নেতিবাচক কিছু পেলে শহর রক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব।’
জেগে ওঠা চরের বিষয়ে এখনো সরকারি কোনো দপ্তর যোগাযোগ করেনি বলে জানান চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, ‘গত কিছুদিন ধরে চরটি পর্যটন এলাকা ঘোষণা করার জন্য অনেকে দাবি তুলছেন। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
চরটি সরেজমিনে দেখেছেন জানিয়ে এডিএম বলেন, ‘এটি প্রাকৃতিকভাবে জেগে উঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চরের কারণে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়ে কি না এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/মোআ)