রাজশাহীতে ‘বখাটে’ ধরতে মাঠে প্রশাসন

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
  প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ২৩:৩২
অ- অ+

‘বখাটেদের’ ধরতে মাঠে নেমেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। শনিবার থেকে মহানগরীতে ইভটিজিংবিরোধী বিশেষ এই ভ্রাম্যমাণ আদালত চালু হয়েছে।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামিদুল হক বলেছেন, ‘আমরা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’

‘বখাটেদের’ হাতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একজন শিক্ষক নাজেহাল হওয়ার ঘটনা নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তাদের ধরতে মাঠে নামে প্রশাসন।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম জান্নাত আরা এই অভিযানে নেতৃত্বে দেন। বিকালে ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজ দায়িত্বে ছিলেন। তারা বখাটেদের বিচরণ এলাকায় অভিযান চালান।

এদিকে শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, বখাটে ‘বাইক বাহিনীকে’ বাগে আনতে শনিবার নগরীর মোড়ে মোড়ে কাগজপত্র যাচাই করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকাসহ নানা কারণে দেয়া হয়েছে রেকর্ডসংখ্যক মামলা। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ অভিযানে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) যোগ দেবে বলে জানান রাজশাহীর ডিসি হামিদুল হক।

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে বখাটেদের দৈরাত্ম্য যে বেড়ে গেছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা অভিযান শুরু করেছি। প্রথম দিন আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত জনবহুল স্থানগুলোতে অবস্থান নিয়ে কারও কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তা দেখেছে। মেয়েদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছে কেউ বিরক্ত করছে কিনা। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা অভিযান অব্যাহত রাখব, যতক্ষণ না পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট হচ্ছি।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘রবিবার থেকে পুরো রাজশাহীতে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানও শুরু করবে পুলিশ। রাজশাহীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের তৎপরতা থাকবে বলেও জানান তিনি।’

এদিকে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে বলা হয়েছে, ইভটিজিংবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু করা হয়েছে। এটি চলতে থাকবে। সাথে সাথে অনিয়ন্ত্রিত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, নিরিবিলি বসে গাঁজা বা মাদক সেবন ইত্যাদি অভিযানও চলবে। যারা ইভটিজিং-এর শিকার, তারা ভয় না পেয়ে থানায় বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করুন। আপনি প্রতিবাদ শুরু করলে আরো অনেকে সাহসী হবে।’

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় উঠতি বয়সী সন্তানদের সামলাতে অভিভাবকদের উদ্দেশে ফেসবুকে অপর একটি স্ট্যাটাস দেন জেলা প্রশাসক হামিদুল হক। এতে সন্তানদের খোঁজ-খবর রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ইভটিজার হিসেবে আটক হলে জেল-জরিমানা হতে পারে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী হাকিম জান্নাত আরা। কেমন পরিবেশ দেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শহরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো এবং স্কুল-কলেজের সামনে দিয়ে তারা ঘুরেছেন। কোথাও সেরকম কিছু দেখতে পাননি।’

তিনি বলেন, ‘মূলত তারা সচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাও নিতেন।’

বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এই অভিযানের দায়িত্বে ছিলেন নির্বাহী হাকিম আরাফাত আমান আজিজ। তিনি নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল ও ভদ্রা পার্ক এলাকা ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘সামনে সেরকরম কিছু পড়েনি। এটা একদিনের কাজ নয়। নিয়মিত চলবে।’

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রবিবার থেকে যে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট ইভটিজিংবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বে থাকবেন তাদের মুঠোফোন নম্বর গণমাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। সবাই তা জানতে পারবেন। কোথাও কেউ বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হলে ওই ফোনে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে পারবেন।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, তিনি রাজশাহীর পুলিশ সুপারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। মহানগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়েও এই ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে দেয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থার কারণে যারা বখাটে বা যারা ইভটিজিং করে তারা একটা ভয়ের মধ্যে থাকবে। তারপরেও যারা কথা শুনবে না তাদের ধরে ফেলা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে ট্রল, দিনাজপুরের এএসপি প্রত্যাহার
‘গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি’
“চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, পার পাবে না”
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা